অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
ভালোবাসার কবিতা - সুলতানা শিরীন সাজি

স্বপ্নে আমি মাঝেমাঝে ছবি আঁকি।
সেদিন এঁকেছিলাম, আন্দামান নিকোবরের ডলফিন রিসোর্টের কাছের,সমুদ্রের মাঝখানের ‘ইচ্ছে’ নামের গাছটার!
কবে তোমার বুকের খুব কাছে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে বলেছিলাম নিজের সংগোপন ইচ্ছে !
রাত ফুরাতেই দেখি শিয়রের টেবিলে দুটো টিকিট!
একটা নোটস এ লিখে গেছো,”তোমার হাসির ফোয়ারার কাছে জমা আমার জীবনের সমস্ত আহ্লাদ ‘
এ যেনো রুপকথার গল্পের সেই, হাতিশালে হাতি,
ঘোড়াশালে ঘোড়া,
বলা নেই, কওয়া নেই রুপকথাতেই পরিচয়!

জীবনের সেই সাতটা দিন, যেনো জীবনের বাইরের অপার্থিব এক জীবন!
দিন মিশে গেছিল রাতের গভীরে, আর রাত জেগেছিল অন্তরে বাহিরে আলোর জ্যোছনা মেখে!
সমুদ্রের মৎস্যকুমার ইকথিয়াণ্ডর সেজে সারাবিকাল একদিন গুত্তিয়েরের সাথে তুমুল প্রেমে !

পৃথিবীতে যখন যুদ্ধবাজ দেশেরা মারছে মানুষ,
অস্ত্রের ঝনঝনানিতে কাঁপছে মানুষ এবং শহর!
ছুটছে মানুষ সাজোয়া গাড়ির থেকে দুরে যাবে বলে!
এখানেই ইউক্রেনের লিলিয়ানাকে ভালোবেসেছিল মস্কোর ইভানুসকা!
দুজনেই খুঁজছিল পালাবার পথ!
দূরে যাবে, কাছে পাবে বলে!

শুধু দুটো টিকিটের কি অসীম ক্ষমতা দেখো!
তোমার শহরে জাগলো সকাল,
আমার বিকেলের রং এ মিশে আকাশ হলো সমুদ্রের মত দিশাহারা!
বালির উপরে তুমি লিখলে, চোখ!
আমি লিখলাম, জল।
জীবনের কয়েকটা সূর্যাস্তের দখল নিলাম তোমার হাতের মুঠোয়!
আর কি কিছু লাগে জীবনে?
হাইব্রিড গাড়ি?
নদীর ধারের ম্যানশন?

কখনো কি গেছো হারিয়ে, পাইনের বনে?
ওখানেই বালির নীচে ঘর আছে লাল কাঁকড়াদের!
ওদের পিছনে ছুটতে থাকা সেই বিকালটা?
মনে কি পড়ে সেই গান কবিতার ঝরঝর বৃষ্টিতে ভেজা?

সূর্যাস্ত দেখার সেইক্ষণে পিছন থেকে জড়িয়ে কতবার ডেকেছিলে প্রথম প্রেমের নামে!
তবু সেই প্রেম মধুর মনেহয়,
কে লিলিয়ানা, কে গুত্তিয়েরে?
কিইবা এসে যায় বলো, মানুষ যখন ডুবে থাকে মানুষের প্রেমে?

সুলতানা শিরীন সাজি
অটোয়া, কানাডা