অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
কি এমন ক্ষতি? -দেওয়ান সেলিম চৌধুরী

বৃদ্ধাশ্রম দেখেছি আমি,
     দেখেছি মৌনতার বিষণ্ণ পাহাড়। 
নীভে আসা চোখের জ্যোতি
     আর ফেলে আসা সাজানো সংসার।
সময় দেয়না তাদের সোজা হয়ে থাকার 
     অহেতুক কাঁধে নিয়ে সময়ের ভার। 
জীবনের সব রং মুছে গিয়ে একদিন
     হয়ে যায় বিবর্ণ ধূসর,
একা একা প্রতিক্ষায় গোণা 
     অনাগত মৃত্যু প্রহর।
অতি কষ্টে টেনে নেয়া
     ভাঙ্গা ভাঙ্গা নিঃশ্বাস,
তবুও পৃথিবীতে বেঁচে থাকার
      কত অদম্য অভিলাষ।
অনন্ত কাল দেখে যেতে চায়, পরিচিত পৃথিবী
        আর তার উন্মুক্ত আকাশ।
বেঁচে থাকার একাগ্র বাসনাই এনে দেয় 
        মানুষের মনে বিচিত্র বিশ্বাস।
বিশ্বাসের হাত ধরে ফারাও ও একদিন,
      নিয়েছিল আশ্রয়, মূল্যবান মমির। 
পৃথিবীর যাদুঘরে অনর্থ পড়ে থাকা
      যেন বিভৎস কুমির।
গিল্‌গামেশের ও একান্ত সাধ ছিল মৃত্যুঞ্জয়ী হওয়ার,
ছুটে গেছে গভীর সমুদ্র থেকে সুউচ্চ পাহাড়
কোথাও মেলেনি উত্তর, চিরদিন বেঁচে থাকার।
তবুও মৃত্যুর কাছে হেরে যেতে চায়নি মানুষ
জড়ায়ে ধরেছে তাই ধর্ম্মের প্রলোভনের রঙ্গিন ফানুস।
বিশ্বাসে ভর করে অন্তহীন জীবনের তরে
মানুষ উঠিবে জেগে স্বশরীরে, হাজার বছর পরে
বিবেক বুদ্ধি সহ, নিজেরই আকৃতি ধরে।
সেই হতে প্রাচুর্য্য অথবা বিভৎসতায় বেঁচে থাকা চিরতরে।
অনন্ত কাল বেঁচে থাকার দুরন্ত অভিলাষ
মানুষের মনে এনে দেয়, অহেতুক কল্পনা বিলাস।
তার চেয়ে না যদি আসি ফিরে, অনন্ত কালের ভিড়ে
        কি এমন ক্ষতি?
বরং মৃত্যুই একে দিক, এই পৃথিবীতে
        জীবনের শেষ পূর্ণ যতি।

দেওয়ান সেলিম চৌধুরী
অটোয়া, কানাডা