তিনটি কবিতা - সিদ্দিকা ফেরদৌস তরু
১) অবসর
অবসর, অবসর,শুধুই অবসর
অনেকটা পথ গেছে চলে
শেষেরটা নয়তো বেশি দূর।
আমার মনের ক্যানভাসটা বড় বেশি খালি
শুন্যতা আছে ছেয়ে, সাদা ক্যানভাসটা
দেয় না সুখ, থাকতো যদি কালির আঁচড়,
সেটাই হতো সংগী সচারাচর।
আজ আমি অনুভব করতে চাই
অখণ্ড অবাঞ্ছিত অবসরকে।
আজ অনেকদিন পরে দক্ষিণের
জানালাটার পর্দা সরিয়ে
নিচের দিকে তাকিয়েছিলাম
আমার মনে হলো সব হয়ে গেছে স্থবির,
কর্মচাঞ্চল্য থেমে গেছে, অবসাদ করেছে ভর।
থেমে গেছে পাখির কলরব
সবচেয়ে উচু ইউক্যালিপটাস গাছটির নৃত্য থেমে গেছে, নেই উল্লাস, আছে শুধু পরিতাপ।
এরই নাম যদি হয় অবসর,
খুঁজবোনা তোমাকে আর
হবোনা তোমার জন্য কাতর।।
২) যদি তুমি চাও?
তোমার আধোবোঝা অক্ষীর পল্লবে কেনো জানি
অনেক না-বলা কথা কি বলতে চায়?
হৃদয়-মাঝে লুকায়িত-
অব্যক্ত কথা,বেদনা
আমারে করে সদা, ভাবায়িত।
পত্র-পল্লবের মর্মর শব্দে
কেঁপে উঠে আলুয়ায়িত মন।
পাশে পাবে, পাশে রেখো
যদি আমারে চাও।
যদি তুমি চাও,তোমার জন্য
করতে পারি অপেক্ষা যুগ-যুগান্তর
অথবা অন্য জন্ম পর্যন্ত।
কেন উচাটন হৃদয়?
নিষ্প্রদীপ তমিস্র করে দূর
আলোকরশ্মি হয়ে ছড়াবো প্রসন্নতা।
যদি চাও আমারে—
শেষ করো অশ্রুত্যাগ,শান্ত করো কম্পিত মন।
পাশে আছি,পাশে থাকবো
যদি আমায় করো-
আচঁলভরা বিশ্বাস,নয় উপেক্ষা।
তবেই হবো তোমার ভালোবাসার আভরণ
জড়িয়ে থাকবে বিশ্বাসে গিরিসম।
যদি তুমি চাও।
৩) অস্তিত্ব
ঝিরিঝিরি বাতাস,আকাশটা মেঘে-ঢাকা
মাঝে মাঝে গর্জন গুরুগুরু,
ঝড়ছে ঝড়-বৃষ্টি অঝোড় ধারায়
মুছে যাক কষ্ট-দুঃখ যন্ত্রণা গুলো
চারিদিক অন্ধকার লোডসেডিং ভয় দুরুদুরু।
জানালার শিকগুলোর মাঝে হাত গলিয়ে
শুধু চেয়ে থাকা অক্ষির সম্মুখের রাস্তাটায়।
কত মানুষের যাওয়া-আসা,কত কথন,
মাঝে-মধ্যে টুংটাং শব্দ করে
চলছে দু-চারটা রিকশভ্যান।
এরই মাঝে কয়েকটি কুকুরের একে
অন্যের সাথে চলে মারামারি,
স্বার্থ নিয়ে চলছে কামড়াকামড়ি।
ভাবছি এদের সাথে সুসভ্য
মানুষের তফাৎ কোথায়?
নিজেদের ক্ষমতা,অস্তিত্ব নিয়ে
হামেশাই চলে দ্বন্ধ-বিরোধ,
কেউ হারে কেউবা জেতে
সবাই স্বার্থের বন্ধনে আবদ্ধ।।
সিদ্দিকা ফেরদৌস তরু
ঢাকা, বাংলাদেশ
-
ছড়া ও কবিতা
-
02-11-2023
-
-