পার্শ্ব চরিত্র - ফরিদ তালুকদার
মাটিতে ঘাসফুল
নীল সাদা হলুদ...
প্রজাপতির ডানায় ব্যস্ততা জানিয়ে দেয় বাতাসটা দখিনার
তপস্যা সুন্দর খুশি খুশি এক ভোর
সোনা-রূপা বুকে কোলাহলে মেতে ওঠে সবুজ,
স্বপ্ন ঘোর!
আমি শুনি সব, ছুঁয়ে যায় অনুভব
তারপরও ঠিক যেন এক হ'তে পারি না ওদের সাথে
চেষ্টা করি, কোথাও তবু কেটে যায় সুর!
একটা তুমুল চাপা কান্না, নাকি ক্ষোভ?
বুঝতে পারি না
এক তীব্র বিমূর্ততার অবগুণ্ঠন আমি খুলতে পারি না কিছুতেই!
এই কলমের নিবেও যেমন-
যে শব্দেরা একসময় সব শ্লোগান হ'তো অবলীলায়, দগ্ধ হ'তো নিপিড়ীত মানুষের মগজের মতো
রাজপথ কাঁপিয়ে মিছিলের মতো ছুটে যেতো কবিতার আদ্যপান্ত
তারা আজ আর কোথাও নেই!
একটা অতীত, একটা দীর্ঘ দীর্ঘ অতীত
ত্রস্ত পায়ে ছুটে এসে বর্তমানকে জানিয়ে দেয়-
দেখলে তো অনেকটা কাল, কিছুুই হয় না এসব করে?
মুষড়ে পড়েও আমি আবার জেগে উঠতে যাই
কিন্তু!?---
এখনো যে রক্ত ঝরে সেই একই রকম
যেমন রক্তাক্ত ছিলো আমার পূর্ব পুরুষদের জনপদ
বিভাজিত ধর্মে, বর্ণে, গোত্রে, লিংঙ্গে...
তাহলে কি আমরা উত্তরণের ভুল নকশা হাতে গান গেয়ে এসেছি এতোটা পথ!?
আবিস্কৃত আগুন এখনো যে পুড়ে ফেলতে পারেনি আমাদের অন্তর দেয়ালের একটিও কালো দাগ!
মানুষের এই অবয়ব নিয়ে আমি তাই আর-
কোথাও কোনোকিছুর সাথে একাত্ম হ'তে পারি না!
এই যে-
এমন একটি সকালেও পড়ে থাকি এক পার্শ্ব চরিত্র হয়ে!
আজন্ম যার ভালোবাসার কাছে বন্দী
সেই নীলিমার বুকের সবটা উষ্ণতাকে শুষে নিতেও- এখন আমি হয়ে থাকি এক দূরের সংলাপ!
ফরিদ তালুকদার
টরন্টো, কানাডা
-
ছড়া ও কবিতা
-
09-03-2024
-
-