অটোয়া, বৃহস্পতিবার ২ মে, ২০২৪
সিদ্ধেশ্বর হাটুই এর দুইটি কবিতা

১) পাবে না আর ফিরে

জীবন হতে পলায়িত দিনগুলো
কখনো পাবে না আর ফিরে,
যে তারাগুলো ঝরে গেছে আকাশের বুক থেকে
আর তারা ফেরে না কখনো ঘরে।

যে আয়না একবার টুকরো হয়ে যায়
চিরতরে সে আপন আকৃতি হারায়,
যে নদী একবার সাগরে সমবেত হয়
সে কী কখনো পিছন ফিরে চায়।

কাননে মুখ ভরা হাসি নিয়ে যে ফুল বিকশিত হয়
ক্রমান্বয়ে সে গন্তব্যের পথেই পা বাড়ায়,
যে কলমের কালি হঠাৎ শেষ হয়ে যায়
সে কলম প্রকাশের শক্তিটুকু হারায়।

কেটে গেলে রাত আসে সময় প্রভাত
যায় না চাঁদ দেখা,
জীবন একবার চলে গেলে হায়, পাবে না আর ফিরে
এ যে বিধাতার লেখা।

কালের নিয়ম বড়োই কঠিন
লাগাম তাহার হাতে,
আসবে একা, যাবে একা
কেউ যাবে না সাথে।

মোমবাতি জ্বলে মোম যায় গলে
পুড়ে হয়ে যায় ছাই,
অনন্তরে তার সমীপে আর
চাওয়ার কিছু নাই ।

মায়ায় ঘেরা এ সংসারে
যে যায় চলে আসে না ফিরে,
কান্না যে তোর শুনবে না সে
মিছেই চোখে অশ্রু ঝরে।

ছিল যাওয়ার তাই গেছে চলে
ডাকিস না তারে আর… এমন করে,
সকল খেলা এ পাঠশালা সাঙ্গ করে
আর কী ফেরে সে দুঃখের তরে।

এ ঘর ছেড়ে….. ওঘর গেছে
ওঘরে যে … অপার শান্তি ঝরে,
ভুলে যা তারে আপন করে
স্মৃতিটুকু তার আঁকড়ে ধরে।

চলে গেছে যে আসে না ফিরে
গাইছে বাউল উদাস সুরে,
সাক্ষী আকাশ, দেখছে মাটি
কেউ আসে, কেউ…. যায় রে ফিরে।

২) ভূতল যখন ছুঁয়েছে চরণ

আঁধার হতে আলোর পথে
যখন এলে চলে
দেখলে সেদিন দিনের আলো
যুগল নয়ন মেলে,
নির্মলতা জড়ানো দেহ
কলুষ ছিল না মনে
ভূতল যখন ছুঁয়েছে চরণ
প্রবেশিল পাপ গোপনে।
বেলা বয়ে যায়  ভরে বাসনায়
ছুটে চলে মন আশায় আশায়,
অবিচার, সুবিচারের মানদণ্ডে তাই
কেউ কম, কেউ বেশি নম্বর পায়।

অন্তরালের ন্যায়াধীশ প্রভু
করেন তার ন্যায্য বিচার।
আলোর পথের কিনারা আঁধার
সেখানেই হবে সব একাকার।

সত্যের পথে দুর্বোধ্য স্বাচ্ছন্দ্য
অন্যায়ে বাড়ায় যন্ত্রণা,
আলোর পথে অবস্থানে তাই- আঁকো
মঙ্গলকামী আলপনা।

সিদ্ধেশ্বর হাটুই
বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ