অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
কবি ও কামিনীর ক্কাসিদা - মহসীন বখত

রবানরের কালে কামিনী  তোমাকে বিরহ যাপন করেছে অর্ধমানবেশ্বর
শৈলপাথরে বসে শীতার্ত সমুদ্রের ঢেউ দিয়ে তোমাকে লিখেছে কবি
প্রেমের কবিতা আত্মাহুতির প্রতিদিন। 

সেই সন্ধ্যাবিরাগ নিরালা দুপুরবেলার মন
তোমার জন্য জন্মবিচ্ছেদ একাকী হেঁটে আসে চাঁদেপাওয়া ঘুমন্ত
খঞ্জদের পায়ে
গা ভিজিয়ে জোছনার হরিদ্রা জলে 
ঘোর নিশির ডাকে ঝরে কবির স্বরবৃত্ত স্বেদবিন্দু 
বিষন্ন ব্রম্মান্ডে। তোমার জন্য প্রেম লিখে রাখে কবি পাথরে অন্তরে 
মরক্কো-গুহা-জিব্রাল্টায়।

তোমার নিয়ান্ডালতাল পসিনার ঘ্রাণ বড় অচেনা লেগেছিল প্রথমে
তবু কবির স্নায়ুতন্ত্রে দূরসম্পর্কের কাম চিনেছে  শরীর
পুষ্পঘুম টুটে গেল আমাদের অবিনাশী অঙ্গে। নিসর্গের উঠোনে

চাঁদশশীর 
ভাষাগুলো এসে উচ্চারিত হয়েছে রাতের রতিলগ্ন পাখির ডানায়
নদীতে বয়ে গেল জোছনা ভাসানের গল্প।
গ্রেট-রিফট ভ্যালীতে তখন আগ্নেয়লাভার উত্তাপ আমরা সয়ে গেলাম 
মহাজাগতিক কম্পন এসে আমাদের কামলগ্ন মন্থন করে চলে গেল, মনে পড়ে?
জারুল ফুলের শরীর তোমার শিমুলতুলোর বীজ নিয়ে নগ্ন বসে রইলে 
নদী ইফ্রেতিসের ঢেউয়ের ডিঙ্গিতে। নাইলের দলছুট মীনকন্যারা ঘাই 
মেরে তোমাকে
অভিবাদন জানিয়ে মাতামুহরীর জলে তলিয়ে গেল অনেক অনেকদিন 
আগে।

তারপর তুমি তোমাকে নিয়ে চর্যার হরিনীর মত নক্ষত্রের অরণ্যে হারিয়ে 
যাওয়ার 
গল্পে ঘুমিয়ে পড়লে স্বর্গের রূদসীদের আসরে। পাড় মাতাল দেবতারা 
তোমাদের নিদ্রাগুলো
পান করে চুমুকে।   কবি ছাড়া কোনো রাজকুমার
সীতা উদ্ধারে এসে বাণবিদ্ধ হয়নি। কতকাল তুমি পড়ে আছ মুখ-ছেনাল
বেনেবউ পাখিদের গল্পগাথা
বজ্রদগ্ধ কবির শিয়রে। তোমাকে ছাড়া কবি ঘরে ফিরেনা, শোনো 
আত্মহন্তা 
শোনো স্বর্গপ্রত্যাখ্যাত বীজমন্ত্র শোনো
প্রস্তরযুগে এসে শয্যা পেতেছি  নলখাগড়ার তপোবনে 
নিভে যাওয়া চাঁদে ভাটবনের মত আঁধারে
আমরা আবিষ্কার করি পরষ্পর ধু-ধু আত্মাকে। জন্মান্ধ সৌররশ্মি লাঞ্চিত 
হয়ে ফিরে গেছে কবে।
আমরা বিদ্যুচ্চমকের লাস্যে আমনহাতপের মঞ্জুশ্রী মূর্তিতে স্বপ্ন 
মাখামাখি 
আমরা বাউরি কূজন অঙ্গে অঙ্গে লুপ্ত হয়ে থাকি।

মহসীন বখত
অটোয়া, কানাডা