অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
অরোরা - ফরিদ তালুকদার

ঘুমের ঘোরে আমি কি সেদিন জল চেয়েছিলাম?
হয়তো বা, হয়তো না
জল তেষ্টাও যে খুব একটা পায় না ইদানীং 
তবে কেন এই ভোরের বৃষ্টি উসকে দেয় দহনের শত বছরী পুরনো উনুন!?

এক জীবনের রূপসাগর পাড়ি শেষে জানলাম-
হিরন্ময় কোনো সকালে শিশিরে স্নাত এক ফুল কুঁড়ির স্বপ্নকে সঠিক আমি পড়তে পারিনি কোনোদিন
দীর্ঘ এই পথে কিছু ভালোবাসার প্রকৃত স্বরূপও রয়ে গেছে জীবন স্তবকের নিভৃত পাতায়!

তবুও---
অপারগতার সে পাতারা যে উল্টালো
এটুকুই না হয় এখন একমাত্র শান্তি 
আবার এও জানি-
এটুকুই হয়ে থাকবে অনুতাপের সবটা দাবানল এক বুকের কেয়ামত-তক!

জীবন তৃষ্ণার রূপ ও রূপকগুলো নিয়ে এখন আর তেমন ভাবি না 
কিছু বোধ তবু তাড়া করে ফিরে অহর্নিশ! 

মোহমুগ্ধ আকর্ষণে উপরের সিঁড়ি পথে ধাপগুলো ভাঙতে ভাঙতে কোনোদিনই জানতে পারিনি-
এর সমানুপাতিকেই কোথাও বাড়তে থাকে এক শূণ্যতা, মহা এক শূণ্যতা!
বোধের অন্ধত্বেই ঘটে যার সর্বগ্রাসী বিস্তার, সে আঁধার গাঢ়, সে আঁধার ভীষণ! 
অভিকর্ষীয় নিয়মেই যে আমাকে ফের টেনে নামায় মাটিতে!

জাগতিক এই জঙ্গলে সাজানো পাশার বোর্ডে 
সংসার আর সিদ্ধার্থ কখনো একসাথে যায় না
এতো হাজার বছরের পুরনো শিক্ষা 
যায় না উদ্ভিন্নযৌবনা রমনীর সু-ঘ্রাণী বুকের মাদকী টানে-
সকল সংকেতকে অবজ্ঞা করে ধমনীতে ঢেউ খেলা লাভার বিনাশী স্রোত-ও!

আমি সিদ্ধার্থ হ'তে আসিনি, আমি সিদ্ধার্থ হ'তে চাইনি
সূর্যমুখীর তাপ-তৃষ্ণার মতো-
কাম ও ক্রোধ-ই বরাবর নিয়ন্ত্রণ করেছে যার ঋজু যৌবনের গতিপথ, বোধিসত্ত্ব অর্জন যে তার সম্ভব নয়!

তবুও---
ঐ যে ফুল কুঁড়িদের বাসনা-বেদনার উপলব্ধি
ওটুকু তো এক মানব জন্মেরই সহজাত বোধ
ওখানেও যদি ভুল থাকে
তাহলে কেন এই?...

কিছু দেরী যে সবসময়ই খুব বেশি দেরী!

ফরিদ তালুকদার
টরন্টো, কানাডা