তপন কুমার বৈরাগ্যের তিনটি কবিতা
১) পয়লা মে
কামার কুমোর শ্রমিক মজুর
এই ভুবনের তটে,
রক্ত তাঁদের জল হয়ে যায়
তারাও মানুষ বটে।
ওই যে কুলি মাল বয়ে যায়
ক্ষুধা আছে পেটে,
পরের তরে জীবন বিলায়
সারাটা দিন খেটে।
যাদের আছে বাড়ি গাড়ি
নিজের চিন্তায় রত,
চাষী মজুর শ্রম দিয়ে যায়
অগণিত যত।
এদের ঘামে সভ্যতা আজ
ভাবি না তো কেহ,
ন্যায্য পাওনা ক'জনে পায়
কায়িক শ্রমে দেহ।
পয়লা মে-তে স্মরণ বরণ
চলছে দেশে দেশে,
শ্রমিক কৃষাণ সারা বছর
তবু করুণ বেশে।
২) খাঁটি
ঝর্ণা তুমি ঝরঝরিয়ে
ঝরো ঝরো তপ্ত তাপে,
সভ্যতা আজ সাহারাতে
বলতে পারো কার সে পাপে?
অগ্নিরূপী সূর্যসোনা
তপ্ত ভুবন রুদ্ধশ্বাসে,
আবহাওয়া আজ অন্য পথে
কে ভরাবে ফুলের বাসে?
রুক্ষ প্রাণে দিবসরাতি
কোথায় আজি বৃষ্টিফোঁটা,
বৃক্ষ নিধন করছি বলে
প্রকৃতি আজ দিচ্ছে খোঁটা।
গ্রীণহাউসের জন্য জগৎ
তপ্ত রবির করাল গ্রাসে,
লুপ্ত হবে জীব ও জগৎ
মানবজাতি আছে ত্রাসে।
ধোঁয়া ধুলোয় যাচ্ছে ভরে
বিষাক্ত আজ হচ্ছে মাটি,
সবুজ শোভার জয়গানে
জীবনটাকে করো খাঁটি।
৩) সব হৃদয়ে রবি ঠাকুর
সব হৃদয়ে রবি ঠাকুর
চিত্ত বনে ফুটান ফুল,
মনের আলো জ্বেলে দিয়ে
মানবজাতির ঘুচান ভুল।
চোখের তারায় আনেন জ্যোতি
এই বুকেতে জোগান বল,
মরা গাছে ফুল ফুটিয়ে
ডালেতে দেন মিষ্টি ফল।
কর্মকরার আবাহনে
সুখের যিনি বাজান বীণ,
তাঁর কাছেতে বাঁচার কথা
আজকে সবাই শিখে নিন।
রবি ছাড়া শূন্য সবই
রুদ্ধ হবে চলার পথ,
সারথী ভাই তিনিই নিজে
তোমার আমার ছুটান রথ।
রবি ঠাকুর নোবেলজয়ী
তাঁর উপরে কেউ তো নয়,
রবির প্রতি বিশ্বাসেতে
আসবে সবার জীবন জয়
তপন কুমার বৈরাগ্য
সাহাজাদপুর
নাদনঘাট
পূর্ববর্ধমান
-
ছড়া ও কবিতা
-
30-04-2024
-
-