অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
মহা রত্নাকর আমার - অঞ্জলি দেনন্দী, মম

বনাক্ত সলিলে যুবতীর ভাসমতী দেহ।
সন্তরণে উৎফুল্ল বালক বা কেহ।
কেহ বা বক্ষ অবধি ডুবাইয়া বসিয়া রহিয়াছে।
কল্লোল সকল নিজ নিজ ভঙ্গিমায় গতিমান।
অম্বরের একম অদ্বিতীয়ম দিনমণি জ্যোতিবান।
সাগর সঙ্গমে নবকুমার কহিয়াছে,
'তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?'
আমি সিক্ত সৈকতে দণ্ডায়মতী, 
ঋষি, সাহিত্য সম্রাট, শুদ্ধ বঙ্গ ভাষার সৃষ্টিকারী
শ্রী বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয় যেন
আমার মানস চক্ষে কলম হস্তে বিরাজমান।
আমার লবনাক্ত শোণিত স্রোতে তাঁর সৃষ্টির গতি।
মস্তিষ্কের ধূসর ও শ্বেত পদার্থ দ্বয়ের কর্ম,
এ হেন সময় অতীতে দিইতেছে পাড়ি।
আমি মনন করিতেছি, প্রকৃতি হইতে শিক্ষালাভই 
পৃথিবীর মনুষ্য জীবনের প্রকৃত ধর্ম।
তাহাই ধারণ করিতে সক্ষম, ভবিষ্যতের মর্ম,
তাহাই অনন্তের পথে অগ্রসর হইবে, 
তাহাতেই সমৃদ্ধ হইবে প্রজন্ম যাহা ভাবি।
তাহাই জগতে শ্রেষ্ঠ আসন লইবে।
আমি দৃঢ়তার সহিত উপলব্ধি করিতেছি,
সমগ্র জীবকূল এই লবনাক্ত সলিলেরই দান।
অবশ্যই বঙ্কিম বাবুর অমূল্য অবদান,
অদ্য তটে আসিয়া আমার মেরুদণ্ডতে তাঁর সৃষ্টি
অতি উচ্চ স্তরের তরঙ্গ শক্তি ভরিতেছে।
মহা রত্নাকরের সহিত দিগন্ত যেইস্থানে মিলিত হইয়াছে
সেইস্থানে সম্বলিত হইতেছে আমার বর্তমান দৃষ্টি।
আমার হৃদ স্পন্দন প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে অতি দ্রুত
মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদি লগ্নে পৌঁছাইয়া গিয়াছে।
সেই অখন্ড অন্ধকারের মধ্যে আলোকোৎস খুঁজিতেছে।
সেই সুদূরাতীতে আমার কর্ণ কর্তৃক বেদও হয় নাহি শ্রুত।
সেই লগ্নে আমার কর্ণ কেবল মহা শূণ্যতার বাণীই নিয়াছে।
এখন আমি সমস্ত কিছু একত্রিতরূপে গ্রহণ করিতেছি।
আপন সংজ্ঞায় বঙ্কিম মহাশয়ের অনবদ্য চরিত্র, 
সেই "নব কুমারের" স্বরূপ মনের মধ্যে সন্ধান করিতেছি। 
নিজ প্রকৃতিকে বলিষ্ঠারূপে গড়িতেছি।
আর আমার বোধগম্য হইতেছে,
বঙ্কিম রচনা চির কালের সাহিত্যের অরিত্র।
তাঁর লেখনীর ধারা অদ্যাবধি ঊর্মিরূপে বহিতেছে।

অঞ্জলি দেনন্দী, মম
নতুন দিল্লী, ভারত