ফরিদ তালুকদারের দুটি কবিতা
প্রার্থনা
সেই আত্রেয়ীর তীর থেকেই না হয় উঠে আসুক সুর
এ মাটি যে আবহমান কাল থেকেই কালো নেকাবের নিচে ম্রিয়মাণ!
এখানে বিদায়গুলো খুব অকস্মাৎ আসে, খুব অসময়ে, খুব বেশি মর্মান্তিক
তবুও মনে হয় কী ভীষণ অনিবার্য এইসব, কী ভীষণ অনায়াস এই ন্যায্য চাওয়ার বিপরীতে ওঁৎ পেতে থাকা রাইফেল!
অনেক অনেকদিন ধরে আমি কোনো গান শুনি না 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো...' সে ও আজ বুকের পাঁজরে আত্মবিলাপে গোঙায়
শুধু তো ভাষার স্বাধিকারেই বন্দী ছিলো না সালাম বরকতের রক্তের স্রোত!
কাঁধে এক জনম কাপুরষতার ঋণ, মাথার মধ্যে হাজার শব্দের মিছিল, তবু কোনো লেখা আসে না
এক শূণ্যবুক মায়ের ব্যথার ভারে শুধুই ন্যুব্জ হয়ে আসে কলম!
একটি গান শুনতে চাই, অন্যরকম
থমথমে রাতের আকাশে ক্রমবর্ধমান শোক বৃক্ষের পাতা ছুঁয়ে যার ধ্বনি-
এ মাটির দীর্ঘশ্বাস পৌঁছে দিবে অন্তরীক্ষে!
ভ্রান্ত অনুবাদ
যে আত্ম সত্তায় আমি কলমের কাছে উপনীত হই, তার কিছু নিয়ে আমি তোমাদের সাথে মিশি না, মিশতে পারি না!
বুনো হৃদয়ের সরল পথে লৌকিকতা এক তীক্ষ্ণ ছুরি, বিদ্ধ করে যায় নিয়ত
একা হই তাই, হঠাৎ বৃন্তচ্যুত ফুলের হাসির কাছে পড়ে থাকি নিবিষ্টতায়!
হেমলকের পাত্র হাতে জীবন তো শুধু এক মর্মন্তুদ খেলা
আমার কাছে এসো না, খুব বেশি আর কাছে এসো না, ভুল বুঝবে!
ভুল বুঝলে নিতান্ত দ্রুতই যে শেষ হয়ে যাবে আমার হেমলকের পাত্র
ঐ-ই যে আমার জীবন!
ফরিদ তালুকদার
টরন্টো, কানাডা
-
ছড়া ও কবিতা
-
23-07-2024
-
-