অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
শংকর ব্রহ্মের নির্বাচিত পাঁচটি কবিতা

১) সংস্কার

রণীয় কাজ হল না কিছুই করা
ভুলে ভুলে ফুল উঠল না ফুটে গাছে
কাছে ছিল যারা তারা আজ অনেকেই কাছে নেই
তবু আছে যারা  নিজেরাই তারা অসহায় দিশেহারা

শেষ বেলা এসে    মনে পড়ে শেষে
কত নোনা জল ঢুকে
         জীবনের স্বাদ নোনতা করেছে
যাবে একদিন সব কিছু চুকেবুকে

জীবনে ফেরার ডাক দিলে যদি
সংস্কার কর আবর্জনায় রুদ্ধ গতিহীন যত নদী

২) দুঃখ আমার

কেউ জানে না দুঃখ আমার
দুটো বোতাম হারিয়ে গেছে শীতের জামার
একটা বোতাম হারিয়ে গেছে বাসের ভিড়ে
অন্যটা কে নিল ছিঁড়ে টের পাইনি
তোমার কাছে তাই যাইনি আজ সন্ধ্যায়
সেই কারণে মনের ভিতর ঢুকেছে ভয়
কি জানি কি ভাববে তুমি
সে কথা জানে অন্তর্যামী
সেই দুঃখও আমার কাছে মোটে কম নয়

কেউ জানে না দুঃখ আমার
তোমার সাথে কবে দেখা হবে আবার

৩) ইচ্ছে করে

সবে তুমি এই না ভেবে ছিলাম আজও প্রতীক্ষায়
দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি হঠাৎ তুমি বারান্দায়
আনন্দে মন নাচতে থাকে এখন আমি কি করি
ইচ্ছে করে আদর করে বুকের ভিতর চেপে ধরি

কষ্ট তুমি অনেক দিলে কিন্ত হঠাৎ কাছে এলে
এরপরে আর কি বলি তুমি আমার প্রিয় বলে
ইচ্ছে করে জড়িয়ে ধরে আদর করে বেশ করি
ইচ্ছে করে তোমায় ধরে আচড়ে কামড়ে শেষ করি

৪) প্রেমের মৃত্যু

ই জন্যই এই বয়সে একজন সঙ্গী দরকার
যে বলে দেবে গেঞ্জিটা উল্টো করে পরেছো
        ছি ছি - প্যন্টের চেনটা উপরে টানো
তা না হলে আর বলো সঙ্গীর কিবা দরকার
এই বয়সে একজন সঙ্গী প্রয়োজন
         মাঝে মাঝে বলে ওঠে মন

ভালবাসা যদি ভুল ঠিকানায় ভেসে যেতে চায়
তবে বল হায় কি আছে উপায়
তবে কি তাকে আমি  ফিরাব না ঘরে
       তাই ভাবি যদি প্রেম যাবে অনায়াসে মরে

৫) প্রান্তবেলায়

মূল্য এই জীবনটা যে ফুরিয়ে গেল হেলায় ফেলায়
এখন আমি বিভোর হয়ে ব্যস্ত আছি শব্দ খেলায়
জানি এরও মূল্য কিছু নাই জীবনে
        তাই তো আমি একলা থাকি আপন মনে

বন্ধুরা সব মত্ত হয়ে মাতায় আসর
         দেখি আমি মুগ্ধ চোখে স্তব্ধ কিশোর
একলা মনে আপন জনে ভুলে যে তার
          পথে পথে ঘুরে বেড়ায় আপনি বিভোর

জীবন কেমন ফুরিয়ে যায় হেলায় ফেলায়
         এখন কিশোর পৌঢ় বটে প্রান্তবেলায়

শংকর ব্রহ্ম 
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ