অটোয়া, সোমবার ৭ জুলাই, ২০২৫
রঙিন বাঘ – বজলুস শহীদ

বাঘটা ছিল গভীর একটা বনে
হুংকারে তার পালায় সবাই,
দুঃখ সবার মনে।

প্রতিদিনই বাঘ নতুন নতুন 
ফন্দি ফিকির করে
পশুরা সব ঠিক করল
পালিয়ে যাবে দূরে। 

এসব দেখে শেয়াল মশাই 
বললো সবারে ডেকে
চল বন্ধুরা বন ছেড়ে যাই
নিঠুর বাঘকে রেখে।

দেখি এই বনে কেমনে থাকে 
একাকী বনের রাজা! 
এইটাই হবে বড় শাস্তি 
একাকী  থাকার সাজা।

একদিন সবে ঘর ছেড়ে দিয়ে 
চলে গেল দূর বনে
ক্রোধে রাজা ভাবে, যাবি চলে যা
রইব আপন সনে।

এই মত হায় দিনক্ষণ যায়,
বাঘের কষ্ট বাড়ে,
খেতে নাহি পায়, শিকার মিলেনা
টের পায় হাড়ে হাড়ে। 

ক্ষুধার কষ্ট, জীবন নষ্ট
নাড়ি ভুঁড়ি ছিড়ে হায়,
উপায় না দেখে দিনের আলোতে
জনপদে ধেয়ে যায়।

হাজার মানুষ পিছু নিল তার
কি আর করবে বাঘা
ছেড়ে দিল হাল মরণের কাল
খাইয়া কঠিন দাগা।

ওই পথ দিয়ে দুখু আর সুখু 
হেঁটে যাচ্ছিল স্কুলে 
মৃত প্রায় দেখে মমতার ডোরে
বাঘটারে নিল তুলে।  

বাঘের মুখেতে পানির বোতল 
সুখু যেই  মেলে ধরে 
আস্তে আস্তে চোখ মেলি বাঘ
মিনতি সবারে করে।

আর মেরো নাক বন্ধু আমারে
হবে নাক আর ভুল
বুঝে গেছি আমি নির্দয় হলে 
গুনতে হয় মাশুল।

দুখু বলে তারে বন্ধু হলাম
এই নাও মোর জামা
রঙিন জামা পরে ফেল আজ 
তুমি নও বাঘ মামা।

আজ থেকে  তুমি বন্ধু সবার
সবার হৃদয়ে থাক,
যারা কাছে যাবে সবাইকে তুমি
বুকেতে তুলিয়া রাখো। 

পাখ পাখালিরা সবাই ফিরিল
দেখিল রঙিন বাঘ 
থালা ভরি ভরি খাবার আনিল
বাজালো পূজার ঢাক।

বাঘ বুঝে গেল শাসনের চেয়ে
ভালবাসা বড় ধন
ভালবাসলেই খুঁজে  পাওয়া যায়
সকল আপন জন। 

বজলুস শহীদ
অটোয়া, কানাডা।