ইউরোপের পথে পথে (চার) – দীপিকা ঘোষ
ইউনাইটেড কিংডমের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গ্যাটউইক। এর আয়তন ঊনিশ একর। রিকজাভিক এয়ারপোর্ট থেকে দূরত্ব ১৯২০ কিলোমিটার। সরাসরি ফ্লাইটের পৌঁছুতে সময় লাগে দু’ ঘন্টা আটান্ন মিনিট। ৩রা জুনের মতো আজ মহাশূন্যে ভয়ংকর কোনো জার্কিং ছিল না। তারপরও রানওয়ে স্পর্শ করতে সময় লেগে গেলো তিন ঘন্টা দশ মিনিট। সাউথ টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে কয়েকটি করিডোর পেরুতে সিঁড়ি ভাঙতে হলো বেশ কয়েকবার। হিথরো বিমানবন্দর দিয়ে আগে কয়েকবার যাতায়াত করলেও লণ্ডনের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবারই আমার প্রথম আসা। সুতরাং ব্যাগেজ ক্লেইম এক্জিট ধরে মালামাল সংগ্রহের সুনির্দিষ্ট কনভেয়র বেল্টের দিকে ছুটতে ছুটতেই চারপাশে নজর ফেললাম সংক্ষিপ্ত দৃষ্টিপাতে। আর তখনই একটি বিশেষ সাইনের ওপর আটকে গেলো চোখজোড়া–
রেস্টুর্যান্ট, ক্যাফেটারিয়া, কোল্ড এবং হট ড্রিংকসের সব দোকানপাট ডিপারচার লাউঞ্জে। লেভেল- থ্রিতে। ঘোষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই বললো–
ওসব দেখে কী হবে? আমরা তো আর এখন খেতে যাচ্ছি না!
সে কথা বলিনি। বলছি, খাবারের সব ব্যবস্থাই ওপরে রেখেছে কেন?
ওই সাইনের মানে সেটা বোঝায় না। নিচে নিশ্চয়ই শুকনো খাবারের দোকানও রয়েছে!
লাগেজ সংগ্রহ করে ঘোষ ব্যাগেজ কার্ট আনতে গেলো কোণের দিকে। কার্ট ব্যবহারের জন্য এখানে মেশিনে কয়েন ফেলতে হবে। কিন্তু ফেলতে গিয়েই হোচট খেলো ঘোষ। নির্দিষ্ট ব্রিটিশ কয়েন ছাড়া ইউরো এক্সেপ্ট করছে না। বিপন্ন মুখে তাকালো সে–
কী করা যায়? আপাতত ব্রিটিশ কয়েন তো নেই! এত ভারি স্যুটকেস নিয়ে..!
এখানে মানি এক্সচেঞ্জ অফিস নেই?
চোখে তো পড়ছে না!
তাহলে সামনের ওই ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করি।
ভদ্রলোক চেহারায় মধ্যপ্রাচ্যের। ইউনিফর্ম দেখে তাকে এয়ারপোর্টের কর্মী বলে মনে হলো। কিন্তু প্রশ্ন করতেই গুরুগম্ভীর হয়ে বললেন–
জানি না।
ঘোষ যথারীতি বিরক্ত হলো–
শুধু শুধু মানুষকে বিরক্ত করছো কেন?
হঠাৎ ওপাশ থেকে একটি অনুকূল হাত প্রসারিত হলো। মাঝ বয়সী সুন্দরী ব্রিটিশ ভদ্রমহিলা নিজের ব্যাগ থেকে ব্রিটিশ কয়েন মেশিনে ফেলে বললেন–
এবার কার্টটা বার করে নাও।
বলেই উদার হৃদয়ে স্মিত মুখে তাকালেন। ধন্যবাদ জানিয়ে এবার আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়ার পালা। কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ করার আগেই আরও একবার স্মিত হেসে পথের বন্ধু দ্রুতপায়ে মিলিয়ে গেলেন জনতার ভিড়ে। স্বামীজির অমৃত বাণী মনে পড়লো - ‘কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক, কে বলে তা বহুদূর? মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতেই সুরাসুর’!
এয়ারপোর্টের ভিড়ে খানিক পরেই দেখা দিলো তিনটি পরিচিত মুখ। শুচি, কণিষ্ক আর ওদের মা। মা, মেয়ে দুজনেই ডাক্তার। চব্বিশ বছরের শুচি কদিন আগে পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে নতুন ডাক্তারের খেতাব পেয়েছে। ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। বয়স কুড়ি। দেখা হতেই মায়ের নির্দেশ–
মেসো, মামণিকে প্রণাম করো।
মেসো ইতস্তত করে বললো–
ওসব বাড়িতে গিয়ে হবে!
উত্তরে দুজনেই নিঃশব্দে প্রণাম শেষ করে হাসলো–
এটা আমাদের কালচার মেসো!
M-23 হাইওয়ে ধরে গ্যাটউইক থেকে উত্তরের দিকে আমাদের গাড়ি ছুটছে দুরন্ত বেগে। ড্রাইভারের আসনে কুড়ি বছরের কণিষ্ক। সামনের আসনে মেসোকে বসিয়ে প্রত্যয়দীপ্ত ভঙ্গিতে গল্প করতে করতে ড্রাইভ করছে সে-
এরপর A-23 লণ্ডন-ব্রাইটন হাইওয়ে দিয়ে যেতে হবে মেসো। তারপর M-25। ইউ কে-এর মেজর রোড হচ্ছে, M-25, M-11, A-12, M-23 আর A-23। তুমি যদি কাল আমার সঙ্গে বেরোও, তাহলে অনেকটা কালই তোমায় দেখিয়ে আনতে পারবো!
না! কাল মেসো পুরোপুরি রেস্টে থাকবে! কাল শুধু খাওয়া আর ঘুম! কণিষ্কের জননী সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদী হলো। তারপর আমার কানের কাছে ফিসিফিসিয়ে বললো–
সুযোগ পেলেই সারাদিন ধরে গাড়ি চালাবে! আর এত জিদ, কিছু বললেই রেগে লাল! বলে খাবারের পাত্রটা আমার কাছ থেকে নিয়ে এগিয়ে ধরলো সামনের দিকে–
চঞ্চলদা, নিন, পুরোটা শেষ করে ফেলুন!
ওরে বাব্বাঃ এই তো খেলাম! এখনই এত খেলে বাড়ি গিয়ে খাবো কী করে শ্যালিকা? নাকি রান্নাবান্না হবে না আজ?
উত্তরে শ্যালিকা অন্তর খুলে হেসে উঠলো জোরে জোরে।
মেয়ে বললো–
তুমি কি জানো মেসো, মার ফেভারিট কাজ কোনটি? কাল সন্ধেবেলা হাসপাতাল থেকে ফিরে রাত বারোটা অবধি শুধু কিচেনে কাটিয়েছে। ওটাই হচ্ছে রিলাক্স করার জায়গা! আর পাপানের জন্য তুমি হাণ্ড্রেড পার্সেন্ট ধরে নাও, ড্রাইভিং তার মোস্ট ফেভারিট কাজ!
অনেক উঁচু থেকে গাড়ি নামছিল নিচের দিকে। সামনে থেকে কণিষ্ক এবার কণ্ঠস্বর উঁচুতে তুললো–
মামণি, ওই দেখো ‘দ্য টাওয়ার অফ লণ্ডন’! আমরা একটু পরেই ব্ল্যাকওয়াল টানেলের ভেতর ঢুকে পড়বো! টেমস নদীর নিচ দিয়ে চলে গিয়েছে এই টানেল!
কথাগুলো উচ্চারিত হতেই ব্রিটিশ রাজ্যের একরাশ অতীত ইতিহাস, মুহূর্তে হংসবলাকার মতো ডানা মেললো চোখের সামনে। ন’শো বছর আগেকার রাজদুর্গ, আমার চিন্তার স্রোতকে বহু ঘটনার আবর্তে ভাসিয়ে নিয়ে গেলো পলকের মধ্যে। কানের ভেতর আছড়ে পড়লো রাজপরিবারের কত গুপ্তহত্যার দীর্ঘশ্বাস! বীর সৈনিকের অবিরাম অস্ত্রচালনার ঝনঝনানি! অসহায় বন্দীদের আর্তিময় আকুল ক্রন্দন! ব্রিটিশ রাজমুকুটের নিষ্ঠুরতা, গৌরব, হতাশা, ষড়যন্ত্র আর সহস্র ঘটনার সুদূর অতীতের সাক্ষী ‘দ্য টাওয়ার অফ লণ্ডনের’ দিকে অজান্তেই দৃষ্টি অপলক হয়ে রইলো! দেখতে দেখতে একটু পরেই রামধনু রঙ আলোর রাজ্যে প্রবেশ করলাম আমরা। বিংশ শতাব্দীর সেই বিশ্বখ্যাত ‘ব্ল্যাকওয়াল টানেলের’ ঝলমলে রাজ্যে এসে পড়লাম ঢালু হতে হতে। মনে হলো সহসা মৃত্তিকা মায়ের গর্ভদেশে প্রবেশ করে যেন অনন্তকালের জন্য বন্দী হয়ে গেছি।
কণিষ্ক ফের মেসোর সঙ্গে কথা বলছে–
এই টানেল দিয়ে রোজ ৫০০০০ গাড়ি আসা যাওয়া করে।
এটার দৈর্ঘ্য কত হবে?
ছ’হাজার দুশো ফিট। কিন্তু এখানে প্রবলেমটা কী জানো? সাউথবাউণ্ড আর নর্থবাউণ্ডের মধ্যে অ্যাক্সিডেন্ট হলে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো ইমারজেন্সি লেন নেই! ইউরোপের সবগুলো টানেলের মধ্যে ‘ব্ল্যাকওয়াল’ হচ্ছে ওয়ার্স্ট! এটাকে ব্যবহার করা হয় স্রেফ অন্য জায়গায় ভিড় কমানোর জন্য!
সামান্য একটু ঝাঁকুনি হতেই সতর্ক হলো ঘোষ–
সাবধান পাপান! স্পিড কমিয়ে দাও! এখানে অনেক শার্প বেণ্ড দেখতে পাচ্ছি!
কণিষ্ক অতি শৈশব থেকেই স্বভাবে স্পর্শকাতর। পেছন থেকে তাই বললাম–
তুই অবশ্য ভালোই চালাচ্ছিস পাপান!
অতি উৎসাহে সে অমনি প্রশ্ন করে বসলো–
মেসো, আমি এখন আমেরিকায় গিয়ে গাড়ি চালাতে পারবো তো?
হাঁ, হাঁ খুব পারবে! আমেরিকায় গাড়ি চালানো এর থেকে সোজা!
বুঝলাম তার এই ক্ষোভ গতবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। গত বছর মেসোর বাড়িতে বেড়াতে এসে সে গাড়ি চেয়েছিল। তখন কারুর কাছেই পারমিশন পায়নি। কারণ, ড্রাইভিং সিস্টেম আমেরিকা এবং ইউরোপে হুবহু একই রকম নয়। সুতরাং চালাতে গেলে সেই পদ্ধতিতে একটু অভ্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কণিষ্কের জননী এবারও আমার কানে ফিসফিস করলো–
এসব কথা বেশি বলিস না! প্রশ্রয় পেয়ে যাবে! এমনিতেই তিন-চার বছর আগের থেকেই বায়না ধরেছে, দিদিভাইয়ের মতো আমাকেও গাড়ি কিনে দাও!
পরের দিন সকালবেলায় পায়ের ওপর একটা হ্যাঁচকা টানে ঘুম ভাঙতেই দেখি, দুষ্টু হাসি মুখে ছড়িয়ে কণিষ্ক পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে। অতি শৈশব থেকে মামণির ন্যাওটা সে। যত দুষ্টুমি, যত খুনসুটি সব মামণির সঙ্গে। চোখ খুলতেই নিচু স্বরে বললো–
মামণি, অনেক বেলা হয়ে গেছে! সবাই রেডি! কেন এত বেলা অবধি ঘুমোচ্ছো?
এ্যাই, কেবল ছ’টা বাজে, এখনি এত বেলা হয়েছে কী রে?
কিন্তু বাবা, মা দুজনেই তো অফিসে চলে গেলো। তাদের বাই বাই করলে না?
ও মা! এরই মধ্যে চলে গেলো?
হাঁ। আর মেসো আর দিদিভাই নিচে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে! চলো! এক্সসারসাইজ করতে যাবে চলো! কাল তুমি দু’বার ভাত খেয়েছো! এখন অনেক ক্যালোরি বার্ন করতে হবে! নইলে পেট মোটা হয়ে যাবে!
আচ্ছা, তুই নিচে যা। আমি আসছি রেডি হয়ে।
ভেবেছিলাম ব্রেকফাস্ট সেরে স্নানটান করে একটু বিশ্রাম নেবো আজ। গত তিন দিন ঘুমের খুবই অনিয়ম হয়েছে। কিন্তু ব্রেকফার্স্ট সারতে না সারতেই কণিষ্ক তার প্রস্তাব শোনালো–
মেসো, কাল আর পরশু ইউনিভার্সিটে আমার প্রচুর চাপ, বাড়ি আসা চলবে না। চলো ব্রিটিশ মিউজিয়াম আর কিউ গার্ডেন থেকে আজই ঘুরে আসি।
আমাকেও কাল নরউইচ যেতে হবে। হাসপাতালে কাজ আছে। পরশু সন্ধেবেলা ফিরবো। বলেই শুচি মুহূর্তের জন্য মামণির মুখে তাকালো।
কোনো মন্তব্য করার আগেই মেসোর মুখে স্মিত হাসির আভাস দেখা দিলো–
আমার কোনো অসুবিধে নেই শুচি। আমি রেডি। তোমরা চাইলে এক্ষুনি যেতে পারি।
জানি! সে জন্যই তো তুমি অলওয়েস ইয়্যাং ম্যান, মেসো! কিন্তু আরেকজন...! মামণি, দশ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসবে! আমি কিন্তু পাঁচ মিনিটের বেশি সময় নিচ্ছি না!
গাড়ির বদলে ট্রেনে করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো আজ। সেন্ট্রাল লণ্ডনে গাড়ি পার্কিং-এর ব্যবস্থা মোটেই সুবিধেজনক নয়। মূলত ইউরোপের প্রায় সব দেশেই স্থান স্বল্পতার কারণে ব্যাপক আকারে পার্কিং-এর সুব্যবস্থার অভাব। তাই শুধু মালামাল পরিবহনের বাহক হিসেবে নয় প্যাসেঞ্জার হিসেবে নিয়মিত যাতায়াতের জন্যও ইউরোপের সিংহভাগ মানুষের কাছে ট্রেন সার্ভিসের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। এখানকার ট্রেন সার্ভিসের সুখ্যাতি শতাব্দীকালের। ইংরেজ ইঞ্জিনীয়ার রিচার্ড আবিষ্কৃত স্টিম চালিত রেল, নব নব প্রযুক্তিতে উন্নীত হয়ে এই মহাদেশের ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে একটি ব্যাপক বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে। জাতীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সবক্ষেত্রেই এর অবদান গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত রেলওয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা আন্তঃইউরোপীয় মহাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় সামাজিক জনজীবন যেমন সুবিধেজনকভাবে সর্বত্র অবাধ বিচরণের সুযোগলাভ করেছে, তেমনি রেল যোগাযোগ অর্থনৈতিক উন্নয়নকেও প্রভাবিত করেছে বিপুলভবে। এছাড়াও গৃহযুদ্ধের ফলে যে ইউরোপ বহু খণ্ডিত হয়ে পরস্পরের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তারাও সুউন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় একত্রিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে রাজনৈতিকভাবে সুপার পাওয়ারে পরিণত হয়েছে। এখানে বার বার রেলভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জনের গরজ আমাদের তাই বিশেষভাবেই ছিল।
সল্টএ্যাশ রেলস্টেশন এদের বাড়ির থেকে আধ মাইল দূরত্বের মধ্যে পড়ে। দশ মিনিটে প্রস্তুত হয়েই বেরিয়ে পড়লাম রাস্তায়। এখানে রাস্তাঘাটে পথিক চলাচলের ব্যবস্থাটি বেশ সুখদায়ক। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই সূর্যস্নাত উষ্ণতা জ্বালা ধরিয়ে দিলো শরীরে। অনেকদিন বৃষ্টি হয়নি। স্থানীয় আবহাওয়ার সংবাদ, এ বছর জুন-জুলাইয়ে চরম শুষ্ক মৌসুমের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংল্যাণ্ড। তবে এতটা উষ্ণতা জুনের শুরুতেই সৃষ্টি হতে পারে, জানা ছিল না এভাবে। যদিও জানি, পরিবর্তিত জলবায়ুতে উত্তর দক্ষিণ উভয় গোলার্ধই নাটকীয়ভাবে বদলে যাচ্ছে। এ কথাও অন্যসবার মতো জানা ছিল, পৃথিবী নিজ অক্ষপথে একটু বেঁকে থেকে পরিভ্রমণ করার কারণে উত্তর গোলার্ধের সব জায়গাতেই গ্রীষ্মকালে রাতের চেয়ে দিন বড়।
কিন্তু এতদিন যেটা প্রত্যক্ষভাবে জানা ছিল না সেটা হলো, লণ্ডনে ভোর চারটের পরেই মহাসমারোহে অরুণোদয় তার আত্মপ্রকাশ ঘটিয়ে রাতের অন্ধকার রোমাঞ্চকে বড় বেশি ব্যাহত করে দেয়। আর ওদিকে সূর্যঠাকুর রাত দশটার পরেও তাঁর অস্তিত্বের বিলোপ ঘটাতে চান না। অন্তত শান্ত রাতের রহস্যময় আবরণে তখনও ঢাকা পড়ে না সুদূর আকাশ। সুতরাং ওয়ের্স্টান কানাডার মত জানালায় ভারী পর্দা ঝুলিয়ে এখানেও মানুষকে ঘুমের আয়োজন করে নিতে হয়। আবার শীত ঋতুতে বিকেল না হতেই যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে, সূর্যের অভাব পুষিয়ে নিতে তখন বৈদ্যুতিক আলোই হয়ে ওঠে প্রধান ভরসা। চলবে…
দীপিকা ঘোষ
ওহাইয়ো, আমেরিকা।
-
গ্রন্থালোচনা // ভ্রমণ
-
06-05-2019
-
-