অটোয়া, রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বাকাওভ-এর বিজয় মেলায় আমাদের প্রাপ্তি- কবির চৌধুরী

মাইমা খন্দকার এবং সুপ্তা বড়ুয়া। একজন বাচ্চা মেয়ে, বয়স তেরো-এখনও স্কুলের গন্ডি পার হয়নি। হৈ-হল্লুর করেই সময় কাটে; আর অন্যজন তরুণ কর্মজীবী মা এবং গৃহিণী -ঘর সংসার আর ছেলে মেয়ে নিয়েই ব্যস্ত। বাচ্চা মেয়েটির নাম উমাইমা খন্দকার। উজমা জালাল এবং জামিল খন্দকারের বড় মেয়ে। উমাইমা খন্দকারকে হয়তো কোথাও কোন অনুষ্ঠানে দেখেছি তার সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সাথে অনুষ্ঠানের হলজুড়ে হৈ-হল্লুর, দৌড়াদৌড়ি করতে আর সুপ্তা বড়ুয়া। সুপ্তা বড়ুয়ার সাথে পরিচয় “আশ্রম”-এর একজন পাঠক ও সৌখিন লেখক হিসেবে। তা ও বেশিদিন নয় অল্প কিছু দিন ধরে।   

আমার এই লেখাতে দুই প্রজন্মের দু’জনকে উপস্থাপনের কারণ দু’দিন আগে ‘বাকাওভ’ আয়োজিত “বিজয় মেলা”। ‘বাংলাদেশ কানাডা এ্যাসোসিয়েশন অব অটোয়া ভ্যালী’ (বাকাওভ) বাংলাদেশের ৪৮তম ‘মহান বিজয় দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে ১৫ডিসেম্বর সারাদিনব্যাপী ‘বিজয় মেলার’ আয়োজন করে। মেলাতে আমার যাওয়ার এবং পুরোটা দিন থাকার সৌভাগ্য হয়। বাংলাদেশ এবং কানাডার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অটোয়ায় বসবাসকারী মুক্তিযোদ্ধারা বেলা ১টার দিকে মেলাটির উদ্বোধন করেন। ডিসেম্বরের ঠান্ডা আর হালকা তুষারপাত উপেক্ষা করে অটোয়ার বাঙালিদের আনাগোনায় ‘রিডো হাব কমিউনিটি সেন্টারে’ ‘বাকাওভ’ আয়োজিত ‘বিজয়মেলা’ সারাটি দিনই ছিল বাঙালিয়ানায় ভরপুর। লাল-সবুজের কাপড়চোপড় পরে সবাই মনের আনন্দে খাবারদাবার, কাপড়চোপড় আর গয়নাগাটি কিনে সময় কাটিয়েছেন। লিখতে বা বলতে দ্বিধা নেই বিভিন্ন কারণে দেশান্তরী হলেও আমরা এখনও মনে-প্রাণে বাঙালি। তা’ দেখা গেল আমাদের প্রাণের সংগঠন ‘বাকাওভ’ আয়োজিত ‘বিজয় মেলায়’।  আমি সাক্ষী হলাম কিছু ভাল মুহূর্তের। আমার এই মুহূর্তগুলো উমাইমা খন্দকার এবং সুপ্তা বড়ুয়াকে ঘিরে।



বাংলাদেশের ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে ‘বাকাওভ’ আয়োজিত ‘বিজয় মেলা’র অনেক আয়োজনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘বিজয় মেলায়’ উপস্থিত ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশকে নিয়ে চিত্রাঙ্কন এবং স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় সঙ্গীতানুষ্ঠান। মেলায় আগত দর্শকদের প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ছেলেমেয়েদের আঁকা ছবিগুলো টেবিলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।  আমি যখন ছবিগুলো দেখছিলাম, তখন একটি ছবির প্রতি আমার দৃষ্টি আঁটকে যায়। আঁটকে যাওয়ার কারণ বাংলাদেশের মানচিত্র অংকিত ছবিটিতে ইংরেজি এবং বাংলায় কিছু লেখা দেখে। আমি জানি এদেশে ছেলেমেয়েদেরকে বাংলা ভাষা লেখাপড়া শেখানো কত কষ্টকর। যেখানে শুদ্ধভাষায় কথা বলা শেখাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়; সেখানে এত সুন্দর হস্তাক্ষরের বাংলা লেখা! শুধু কি সুন্দর হস্তাক্ষর? না; তা নয়! সুন্দর হস্তাক্ষরের সাথে সুন্দর কিছু শব্দ! এই শব্দগুলোর জন্য বাঙালিরা বারে বারে রক্ত দিয়েছে, আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। আমাকে নাড়িয়ে দেওয়া বা আবেগাপ্লুত করা শব্দগুলো হল- বাংলা আমার, বিজয় দিবস এবং বাংলাদেশ। শব্দগুলো লেখার লেখকেকে দেখার প্রচন্ড তাগিদ অনুভব করি। অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী কন্ঠশিল্পী নাসরিন শশীকে জিজ্ঞাসা করি ছবিটি যে এঁকেছে তাকে কি দেখা যাবে। নাসরিন শশী অত্যন্ত আনন্দের সাথে মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে আসেন। নাম জিজ্ঞেস করতেই বললো- উমাইমা। সে স্থানীয় স্কুলে গ্রেড এইটে পড়ে। বয়স তেরো। বাংলা শব্দগুলো কে লিখেছে জিজ্ঞেস করতেই বললো- সে লিখেছে। সে বাংলা লিখতে এবং পড়তে পারে। লেখা এবং পড়া কোথায় শিখেছে জিজ্ঞেস করতেই বললো- বাংলাদেশে। বাংলা পড়ালেখা শেখার জন্য সে বাংলাদেশে গিয়ে ৭ মাস থেকেছে। মা-বাবা তাকে দেশে নিয়েই গিয়েছিলেন বাংলা পড়া এবং লেখা শেখাবার জন্য। আমি অভিভূত- মেয়েটা বলে কি! আমাদের মধ্যে এরকম মা-বাবা ও আছেন, যারা শুধু কথায় নয় কাজেও ছেলেমেয়েদেরকে নিজের শেকড়ের সাথে জড়িয়ে রাখছেন!

 
এই তো গেলো উমাইমার কথা। তার পরেরটা আর আকর্ষণীয়। কারণ- আমি কোথাও কোন অনুষ্ঠানে গেলে গানের পর্বটা মিস করতে চাই না। চাই না বলেই ‘বাকাওভ’ আয়োজিত ‘বিজয় মেলার’ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্যন্ত থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করি। চেষ্টাই বলতে হবে। কারণ- সেই দুপুর থেকে যে মেলায় আছি। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি যথাক্রমে কানাডা পার্লামেন্টের সদস্য চন্দ্রা আরিয়া, এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) মিয়া মাইনুল কবিরের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। কন্ঠশিল্পী নাসরিন শশীর পরিচালিত গানের স্কুল ঊষা মিউজিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী যথাক্রমে- প্রিতা, পূর্বা, প্রাচী, নদী, অরা, তানাজ, তারনীম, অরতি(১), রোদসি, অদিত্রি, ঈশানা, ঈশমাম, তানিশা এবং অরতি(২) প্রমুখদের দু'টি দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন আশ্রমের সৌখিন লেখক বা বলতে পারেন ফেইসবুকের নিয়মিত স্টেটাস দানকারী ও ভাল স্টেটাসের শেয়ারকারী সুপ্তা বড়ুয়া। তার ভাল লেখা, মন্তব্য এবং সমাজ নিয়ে ভাল চিন্তার সাথে পরিচয় ফেইসবুকের মাধ্যমে। ঘটনাটি বেশীদিনের নয়। কয়েকমাস আগের। সম্প্রতি সমাপ্ত হওয়া কন্ঠশিল্পী ডালিয়া ইয়াসমিনকে নিয়ে “আশ্রম লাইভ কনসার্ট”-এর ফেইসবুক প্রচারণার একটি স্টেটাসকে কেন্দ্র করে। অল্পসল্প জানাশোনার কারণে মনে হয়েছিল হয়ত তাঁর ছোট মেয়ে চন্দ্রিমা বড়ুয়াকে যন্ত্রে সাহায্য বা সাহস দেওয়ার জন্যই সুপ্তা স্টেইজে এসেছেন।  তিনি তার ৭/৮ বছরের মেয়ের গানের সাথে হারমোনিয়াম বাজিয়েছেন। সুপ্তার সাথে পরিচয়ের এ’ কদিনে একটু আধটু জানতে পেরেছি তিনি সঙ্গীত ভালবাসেন কিন্তু হারমোনিয়াম ও ভাল বাজাতে পারেন তা ঘুর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি। মেয়ের সাথে হারমোনিয়াম বাজিয়ে কান্ত হলে কোন কথা ছিল না। বাধ সেদেছে অন্য জায়গায়। মেয়ের গান এর পর মা-ই যে গান শুরু করার প্রস্তুতি নিলেন- এবং গাইলেন। একটি নয়, দু’টি -- “ঐ রেল লাইনের ধারে” এবং “তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা”।

 
অপূর্ব। আমি সত্যিই অভিভূত। কারণ, অটোয়াতে প্রতিবছরই গানের অনুষ্ঠান হয় কিন্তু কই সুপ্তা বড়ুয়াকে তো কোথাও গান করতে দেখিনি। অন্য সংগঠকের কথা বাদ দিলাম- আমি নিজেও তো বছরে দুয়েকটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। যার মধ্যে ‘আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান’ অন্যতম। সুপ্তা বড়ুয়ার গান শুনে খুব খুশি হয়েছি এই ভেবে যে; কোন এক সময় তাকে নিয়ে ‘আশ্রম একক সঙ্গীতসন্ধ্যা’র আয়োজন করা যাবে। সেই উদ্দেশ্যেই গানের পর দর্শক সারিতে ফিরে আসার পর তাকে বলি- “আপনি তো খুব ভাল গান করেন। শহরে এত সব অনুষ্ঠান হয় কিন্তু কোথাও আপনাকে গান করতে দেখিনি। বলেন তো কেন? সুপ্তা বলেন- “ গান তো করতে তো চাই। কিন্তু সময় কোথায়।

২০০৭ সালে কানাডায় আসার পর এই প্রথম গাইলাম। তবে, দেশে থাকাকালীন সময়ে তো এগুলোই করেছি। ৬/৭ বছর বয়স থেকেই গ্রামে আয়োজিত গানের অনুষ্ঠানে গান গাইতে শুরু করি। গান গাইতে গাইতেই গ্রামের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর সাথে জড়িত হয়ে যাই। এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন, আমাদের অনুষদের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহণ করতাম। তাছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অরাজনৈতিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অঙ্গন’-এর প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানই করতাম। বলতে পারেন, পড়ালেখা থেকে এসবই করেছি বেশি। এখনও করতে চাই। নিজেকে ঘুচিয়ে নেই। অবশ্য ছেলেমেয়েদেরকে এই পরিবেশেই গড়ে তুলার চেষ্টা করছি। যেমন আমার মেয়ে চন্দ্রিমা Gatineau Music Conservatory -এর তালিকাভুক্ত শিল্পী। সে ইংরেজি আর ফ্রেঞ্চ গানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের পাশাপাশি আমার কাছে বাংলা গানও শিখছে।” বললাম- আপনাকে অভিনন্দন। .২০২০ তো হবে না, তবে ২০২১ সালে আশ্রমের জন্য একটি প্রোগ্রাম করেন। খুব খুশি হব। সুপ্তা বললেন- করবো। অবশ্যই করবো। একটু সময় দেন। আমিও আশা করি খুব শ্রীঘ্রই সুপ্তা আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে অটোয়ার সঙ্গীতপ্রিয় দর্শকদের বিমোহিত করবেন। এছাড়াও বাকাওভের এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন মিসেস রোয়েনা খানম এবং কবিতা আবৃত্তি করেন শিউলি হক। জহির রায়হানের স্টপ জেনোসাইড প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৪৮তম ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে ‘বাকাওভ’ আয়োজিত ‘বিজয় মেলা’র সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মেলাটির সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন; বাকাওভের সভাপতি শাহ বাহাউদ্দিন শিশির, সহসভাপতি আনোয়ার খান, সাধারণ সম্পাদক ইছা রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ জামান, যোগাযোগ ও প্রচার সম্পাদক বিধান চক্রবর্তী, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সাদিকা পারভীন চন্দনা, কার্যকরী সদস্য মহসীন আলীসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।   

আমি যখনই সুযোগ পাই, “বাকাওভ” নিয়ে কিছু লিখতে চাই। কারণ- শহরে প্রতি বছরই নতুন কিছু মানুষ আসেন। বসবাস স্থাপন করেন। আবার কিছু কিছু মানুষ শহর ছেড়ে অন্য শহরে চলে যান। তাই আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই “বাকাওভ”- এর উপর্যুপরি আলোচনা অব্যাহত রাখতে হয়। স্বকীয় সংস্কৃতির চর্চা করতে দলমত নির্বিশেষে একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রয়োজন। আঞ্চলিক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কোন সংগঠন স্বকীয় সংস্কৃতির চর্চা করে না। ৩০ বছরের আমার দেখা এই শহরে অনেকগুলো রাজনৈতিক সংগঠন, এনজিও টাইপ সংগঠন, ধর্মীয় সংগঠন এমনকি বিভিন্ন এলামনাই দেখলাম। কিন্তু “বাকাওভ” ছাড়া আর কাউকে বাংলাদেশের ‘বিজয় দিবস’ বা ‘স্বাধীনতা দিবস;-এর অনুষ্ঠান করতে দেখলাম না। যে কয়বারই শহরে বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলো পালিত হয়েছে তা ‘বাকাওভ’-এর মাধ্যমে। এছাড়া “বাকাওভ” নিয়ে বেশি বেশি আলোচনার কারণ- ‘বাকাওভ’ এর জন্ম ১৯৭১ সালে- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। 

১৯৭১ সালের প্রথম থেকেই অটোয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশিরা উৎকন্ঠার মধ্যে দিনানিপাত করতে থাকেন। লেখক ড. মীজান রহমান এবং মুস্তফা চৌধুরীর কিছু লেখায় দেখা যায়, “৭১ সালে ২৫শে মার্চ রাতে ঘুমন্ত ঢাকাবাসীর উপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী্র বর্বর হামলার পরদিনই অটোয়ার বাংলাদেশিরা একত্রিত হয়ে পাকিস্তান সেনা বাহিনী কর্তৃক এই বর্বর ও পাশবিক হামলার প্রতিবাদে অটোয়ার রাস্তায় নেমে আসেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সপক্ষে জনমত তৈরির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন। এ সম্পর্কে মুস্তফা চৌধুরী তার ‘মুক্তি সংগ্রামে অটোয়াবাসী বাংগালী’ প্রবন্ধে লিখেন- ‘১৯৭১ সালে অটোয়াতে বাংগালী পরিবারের সংখ্যা ছিল ১৫। ক্যানাডীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশনের যে সদস্য তালিকা আছে, সেখানে নিম্নলিখিত নামগুলো রয়েছে--- ডঃ ও মিসেস নাসিরউদ্দীন আহমদ, মিঃ ও মিসেস আজমত আলী, ডঃ ও মিসেস মুহম্মদ আহসান উল্লাহ, মিঃ আব্দুল আউয়াল, মিঃ ও মিসেস ফারুখ সরকার, ডঃ ও মিসেস লুৎফুল কবির, মিঃ ও মিসেস আব্দুল সত্তার, ডঃ ও মিসেস মীজান রহমান, মিঃ ও মিসেস আব্দুর রহিম, সর্বজনাব মুহম্মদ হানিফ, মিঃ গনি মিয়া, মিঃ টিপু সুলতান, মিঃ আব্দুল আওয়াল, মিঃ হরিপদ ধর, ডঃ ও মিসেস এহসানুস সালেহ এবং মিঃ ও মিসেস মুহম্মদ জালাল উদ্দীন।“ এইসব তথ্যমতে আমরা অটোয়াবাসী বাংলাদেশিরা বলতে পারি বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে, মুক্তির যুদ্ধে তৎকালীন অটোয়াবাসী বাঙালিদের অবদান আছে, অটোয়াও নিউইয়র্ক আর লন্ডন শহরের মত বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং ‘বাকাওভ’ই ’৭১ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত আমাদের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র সংগঠন। এই সত্যটি শুধু কাগজে কলমে নয়, কাজেও প্রমাণিত। ’৭১-এ যেমন ’২০-এ তেমন! আমি যখন এই লেখাটি লিখছি তখন ফেইসবুকে দেখলাম বাংলাদেশিদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন ‘বাকাওভ’ এর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে অটোয়া সিটি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীকে প্রকলেইম করেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিবসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অটোয়া সিটি ১৭ই মার্চ ২০২০-কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডে হিসেবে উদযাপন করবে। বিজয়ের মাসে অটোয়ার সকল বাংলাদেশিদেরকে অনুরোধ করবো আসুন আমরা সবাই “বাকাওভ”-এর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী বাংলাদেশি- কানাডিয়ান জাতি হিসেবে কানাডার বহুজাতিক সমাজ ব্যবস্থায় নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করি। 

জয় বাংলা। জয় বাকাওভ। 
কবির চৌধুরী । অটোয়া, কানাডা