শিক্ষা -সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার বিকাশ করে গ্রন্থাগার -মোঃইসমত দ্দোহা
আকাশ সংস্কৃতি ও তথ্য -প্রযুক্তির সহজলভ্যতার এই যুগে হাতে বই নিয়ে পড়ার এতো সময় কোথায় আমাদের। কয়েক পৃষ্ঠার একটা পএিকা কিংবা কয়েক পাতার একটা বই পড়তেও আমাদের এখন বিরক্ত লাগে। স্কুল -কলেজের একটা সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য কিংবা (এ +)এর জন্য নির্ধারিত কিছু বই আর সিলেবাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আমাদের বর্তমান শিক্ষা জীবন।
কিন্তু শিক্ষার মানেতো একটা সার্টিফিকেট অর্জন করা না, শিক্ষা হচ্ছে মানুষের মেধাকে বিকশিত করা, অনেক কিছু জানা, আর এই জানার জন্যই বই পড়া। আর বই পড়ার সুন্দর পরিবেশ হচ্ছে একটা পাঠাগার কিংবা গ্রন্থাগার যেখানে হাজারো বইয়ের সমাহার থাকে, যাকে আমরা বলতে পারি বিশ্ব -সংস্কৃতির সেতু বন্ধন।
"লাইব্রেরি হচ্ছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে বই, জার্নাল, পএপএিকাসহ গবেষক ও জ্ঞান পিপাসু পাঠকদের জন্য বিভিন্ন রকমের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। লাইব্রেরি শব্দটির আদি শব্দ 'Liber 'এটি একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ হচ্ছে 'বই '। 'Liber. 'শব্দটির আরেকটি প্রতিশব্দ হচ্ছে 'Libraium 'যার অর্থ হচ্ছে বই সংরক্ষনের জায়গা।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে পুরোনো লাইব্রেরি হিসেবে মিসরের St.Catherine 's Monastery Library কে গন্য করা হয়, আনুমানিক ৫৬৫ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিলো। ভারত বর্ষের সবচেয়ে পুরোনো লাইব্রেরি Saraswathi. Mahal. Library এটি তামিলনাড়ুর তানজোরে অবস্থিত। ভারতের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি National Library of India কলকাতায় অবস্থিত। এখানে ২০ থেকে ২২ লাখ বই আছে, ১৮৩৬ সালে "ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরী "নামে এর যাএা।
১৮৯০ হতে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বর্তমান বাংলাদেশ তদানীন্তন পূর্ববঙ্গে যে লাইব্রেরি গুলো প্রতিষ্ঠিত হয় তা -হলো "নোয়াখালী টাউন হল পাবলিক লাইব্রেরি (১৮৯৬),উমেশ চন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী (১৮৯৬),প্রাইজ মেমোরিয়াল লাইব্রেরী সিলেট (১৮৯৭),ভিক্টোরিয়া লাইব্রেরী নাটোর (১৯০১),চট্রগ্রাম মিউসিপ্যালটি পাবলিক লাইব্ররী (১৯০৪),রামমোহন পাবলিক লাইব্রেরী (১৯০৬),হীরেন্দ্রনাথ পাবলিক লাইব্রেরী (১৯০৮)প্রভৃতি। "(তথ্য সংগ্রহ, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বাংলাদেশ প্রতিদিন পএিকায় প্রকাশিত ৩১/১০/২০১৯ লেখা হতে)
প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থায়ও কিছু সৃজনশীল মানুষ আছেন যারা সমাজে এখনো জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের মতো করে। রাজশাহীর প্রয়াত পলান সরকার, বিশ্ব -সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠিতা স্যার আব্দুল্লাহ আবু সায়েইদ,ইন্জি :আরিফ চৌধুরী শুভ 'র প্রতিষ্ঠিত 'জাতীয় পাঠাগার আন্দোলন (জাপাআ) ,লেখিকা সুপ্তি ইসলামের 'শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিষদ (শিসাপ) এর মতো জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান গুলো বই ও পাঠাগার গঠনের মাধ্যমে জ্বালিয়ে রাখছেন আমাদের ভবিষ্যৎ আশার প্রদীপ।
জাতীয় পাঠাগার আন্দোলন (জাপাআ) এর উৎসাহ ও সহযোগিতায় আমিও আমার নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত করেছি আমার বাবার নামে "গোফরান স্মৃতি পাঠাগার" নামে একটি পাঠাগার। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি গ্রামের মানুষকে নিয়ে একটা আলোকিত সমাজ গড়তে। ভার্চুয়াল জগতের বিনোদন মনের মধ্যে সাময়িক আনন্দ -উওেজনা সৃষ্টি করলেও বইয়ের বিকল্প হতে পারেনি। বই পড়ার আনন্দ ও বিনোদন একটা মানুষকে প্রকৃতভাবে সামাজিক হওয়ার পথ দেখায়, যা অন্য কোন মাধ্যমে পাওয়া যায়না।
১৯৯৫ সালের ২৩ এপ্রিল বিশ্ব গ্রন্থাগার ও কপিরাইট দিবস পালন করা হয়, তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশেও ২০১৮ সালের ০৫ ই ফ্রেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ঘোষণা করেছে সরকার। আমরা চাইবো ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গুলোকে সরকার প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা করার মাধ্যামে তৃণমূল জনগণের কাছে পৌঁছে দিবে গ্রন্থাগার তথা পাঠাগার আন্দোলন কর্মসূচি।
মোঃইসমত দ্দোহা । কেরামতগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর
-
নিবন্ধ // মতামত
-
06-01-2019
-
-