অটোয়া, রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
কবিতার জীবন, জীবনের কবিতা - মীম মিজান

কজন কবি অদম্য। পৃথিবীর তেমন কোন বাঁধাই তাঁকে রুখতে পারে না। যদি তিনি তেমন কবি হোন। কবিতায় যদি তিনি যাপন করেন জীবন। কবিতাকে যদি তিনি মেনে নেন তাঁর জীবনের অবলম্বন হিশেবে। আর যদি আপোস করেন জীবনের সাথে। আপোস করেন প্রতিবেশের সাথে। তবে তিনি দমে যেয়ে পেঁজা তুলোর মতো ভেসে যাবেন। উবে যাবে তার কবিত্ব। ভুলুন্ঠিত হবে তার কাব্যিক জীবন। বিস্মৃত হবেন শিল্পের এই জগত থেকে।

নিজের জীবনের অসম্ভব প্রতিকূলতা, শারীরিক অক্ষমতা, প্রতিবেশের বৈরিতা, লিঙ্গ বৈপরীত্য, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্বল্পতা ইত্যাদিতে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ার কথা একজন শব্দ যোদ্ধার। তবে তিনি এইসব প্রতিকূলতা ও বৈরিতাকে থোড়াই কেয়ার না করে সেগুলিকে জয় করে হয়েছেন চিরস্মরণীয়। হয়েছেন প্রোজ্জ্বল উদাহরণ। হ্যাঁ এমন একজন মানুষ, কবি, হেরে না যাওয়া ব্যক্তিত্ব, আমাদের উৎসাহী করে তোলার অদম্য বিপ্লবের নাম ইউ জিউহুয়া।

ইউ জিউহুয়া চীনের হুবেইতে অবস্থিত ঝোংজিয়াং এর হেংদিয়ান গ্রামে ১৯৭৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান ইউ। তাঁর পরিবার ছিল কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। জন্মের সময় নানা জটিলতা নিয়ে জন্ম নিলে তাঁর মুগুর পা এবং কথা বলতে না পারার রোগ স্থায়ীভাবে থেকে যায়। যার দরুন পড়াশুনো বেশিদূর করতে পারেননি। মাধ্যমিকেই পাট চুকিয়ে যায়। শারীরিক অক্ষমতার কারণে পারিবারিক কৃষি কাজে কোন প্রকার সহযোগিতাও তিনি করতে সক্ষম হননি। তাঁর জন্য কোন বিয়ের বর খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব হলো। এভাবেই ইউ অষ্টাদশী জীবন পেরিয়ে উপনিত হলেন ঊনবিংশতম বসন্তের জীবনে। জননী অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ১৯৯৫ সালে ইইন শিপিং নামক এক বদমেজাজি লোকের সাথে বিয়ে দিলেন। যে ছিল বাইরে থেকে আসা একজন শ্রমিক। বার বছর জ্যেষ্ঠ বয়সের এই মানুষটি খুব কম সময়ই ইউ এর সাথে ছিলেন। কালেভদ্রে দেখা হলেও ঝগড়াঝাঁটি করে বিষিয়ে তুলতো সম্পর্কটাকে। এভাবেই তাদের সংসারে আসে একটি পুত্র সন্তান। পুত্র সন্তান জন্মনেয়া সত্ত্বেও ইইন শিপিং সংসারী হননি। ২০১৫ সালে ইউ এবং ইইন শিপিং এর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। আর এসময়কার জীবনটুকুও তাকে কাটাতে হয়েছিল বাবার বাড়িতে। পাননি সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুমতি। পাননি কোন মানুষের তেমন সহমর্মিতা। অবহেলায় কেটে যায় তাঁর জীবনের প্রায় চল্লিশটি বসন্ত। বসন্তে ফুটেছে ফুল, শীতে পড়েছে বরফ, বৃষ্টির রিনিকঝিনিক ডাক, পাহাড়ের গায়ে ছড়িয়ে থাকা প্রকৃতির আহ্বান, নদীর কলতান, পাখির ঝাঁকের নীড়ে ফেরা, সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ। দেখায়নি তাকে কেউ। তাকে কেউ হাতটি ধরে বা হুইল চেয়ারের পিছনের হাতল ধরে ঠেলে এইসবের আহ্বানে সাড়া দিতে সাহায্য করেনি। আহা জীবন! আহা অক্ষমতা! মানুষটিকে করেছিলে বন্দি।

একমাত্র ভালোবাসার মানুষ ছিল তাঁর জননী। আগলে রেখেছিল পরম মমতায়। কৃষকশ্রেণীর গৃহিণীপনা করা যার নিত্যকর্ম তার পক্ষে কি সম্ভব ছিল তার মেয়েকে উপরোক্ত সবকিছুর স্বাদ আস্বাদন করানোর? হয়ত কায়মনোবাক্যে চাইতেন বাইরের জগৎটাকে দেখাতে। অথবা একজন দরদী পুরুষের হাতে তুলে দিতে তার অবহেলিত মানিককে। কিন্তু পারেননি তিনি। আর ভালোবাসার একটি মাধ্যম ছিল ইউ এর। কথা শোনার মাধ্যম ছিল তাঁর। চোখের জলের ধারার বহমানতা বয়ে যেত যেখানে। সেই সেটি হচ্ছে তাঁর কবিতা। সেই সেটি হচ্ছে তাঁর কাব্যের খেরোখাতা। পৃথিবীর অন্যরা যেখানে তাকে ত্যাজ্য করেছে। তখন তাকে আপন করেছে কবিতা। ভালোবেসেছে কবিতা। বাঁচার নবদিগন্ত উম্মোচন করেছে কবিতা। বাবা-মা'র কাছেই ছিলেন ইউ। তাদের থেকেই পেতেন জীবন ধারণের উপাদান। কিন্তু তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ২০১৫ তে প্রকাশিত হওয়ার পর আর জনক-জননীর কাছে জীবন ধারণের উপকরণের জন্য হাত পাততে হয়নি। তাঁর যখন সরব উপস্থিতি কাব্যজগতে। ভালোবাসার মানুষ, শুভাকাঙ্ক্ষী পাঠক তৈরি হলো তখনি ২০১৬ সালে যকৃত ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পরম দরদী জননী পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।

মনঃপীড়া নিয়ে টেবিলে বসে থাকতে থাকতে তাঁর কবিতার প্রতি ঝোঁক পড়েছিল। তখনি ১৯৯৮ সালে 'ইম্প্রিন্টিং' বা অক্ষর অংকিত করা নামে একটি কবিতা লিখেন যেটির প্রথম পঙক্তি ছিলো 'কাদায় আমি হামাগুড়ি দেই সামনের পানে'। এই তাঁর সৃজন পথের যাত্রা। আর সেখান থেকেই তিনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন কবিতার মানুষ হিশেবে। নিজের দুঃখ-অনুতাপগুলিকে তিনি কবিতায় প্রথিত করলেন। নিঃসঙ্গতাকে উপভোগ করে সেগুলির স্থান দিলেন কবিতার শিল্পিত শব্দবুননে। নিঃসঙ্গতা, দুঃখ-অনুতাপগুলি পেল বয়ে চলে জীবন্ত হওয়ার হেতু।

২০১৪ সালে ইউ এর ভাগ্যবদলে যায়। তাঁর রক্তক্ষরিত কবিতা 'তোমার সাথে ঘুমিয়ে আমি চীনের অর্ধেক ঘুরেছি' সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'ইউচ্যাট'এ ব্যাপকভাবে পোস্ট হতে থাকে। যা তাকে নজরে নিয়ে আসে এবং লাইমলাইনে তুলে ধরে। ফলে প্রখ্যাত ম্যাগাজিন 'পোয়েম ম্যাগাজিন'এ প্রকাশ পায় তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতা। আর দিকে দিকে সুখ্যাতি ও সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।

তাঁর এই ভালোবাসার মাধ্যম, জীবনকে ধারণের মাধ্যম কবিতায় এখন পর্যন্ত তিনি তিনটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। প্রথম কাব্যগ্রন্থটির নাম হচ্ছে, ইউই গুয়াং লুও যাই যুও শোউ শাং অর্থাৎ আমার বাহাতে বিশ্রাম নিচ্ছে জোসনা। এটি ২০১৫ তে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর এই কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হলে চতুর্দিকে সাড়া পড়ে যায়। পাঠকদের ভিতরে আগ্রহ জন্মায় যে, এরকম কবিতা যিনি লিখতে পারেন তিনি এত কষ্টের ভিতর থাকতে পারেন! প্রায় সব পাঠকের দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হোন ইউ। কাব্যগ্রন্থ বিক্রিলব্ধ অর্থ আর নব শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতায় এক সাবলম্বী ও সচ্ছল জীবন পান ইউ। ২০১৫ তেই তাঁর আরেকটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পায় Still Tomorrow অর্থাৎ এখনো আগামীকাল। ২০১৬ সালে তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ We Loved and Then Forgot অর্থাৎ আমরা ভালোবাসলাম অতঃপর ভুলে গেলাম প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি এখন সুখ্যাতি ও প্রতিষ্ঠা লাভ করায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর উপর আলোচনা, তাঁর কবিতার বিভিন্ন ভাষায় রূপান্তর ইত্যাদি প্রকাশিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে তাঁর দু'টো কবিতা বিখ্যাত শিল্পির মাধ্যমে গানে রূপান্তরিত হয়েছে। শ্রোতাদের মাতিয়ে রেখেছে গান দু'টো।

ইউ ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ তে হুবেই প্রদেশের ঝোংজিয়াং সিটি রাইটার্স এসোসিয়েশন এর ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১ নভেম্বর ২০১৬ তিনি চীনের তৃতীয় Peasant Literature Award উৎসবে বিশেষ Peasant Literature Award লাভ করেন। যার ফলে তিনি একলক্ষ ইয়েন নগদ অর্থ পান।

২০১৬ সালে তাঁর জীবনের বেড়ে ওঠার সংগ্রাম, কবিয়াল হয়ে ওঠা, বিবাহিত জীবনের নানা ঘাত প্রতিঘাত, বিচ্ছেদ ইত্যাদির উপর একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ হয়। যা বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে। এই ডকুমেন্টারিটি ইতোমধ্যে ক'য়েকটি সম্মাননা পেয়েছে।

এ পর্যন্ত তাঁর দু'হাজার কবিতা পাঠকের কাছে পৌঁছেছে। এই বিশাল কবিতা সম্ভারে সবথেকে প্রোজ্জ্বল কিছু কবিতা হচ্ছে প্রেমের কবিতা। সমাজের এক প্রান্তিক সীমায় বসবাস যাঁর, তাঁর কবিতা ততোটা মানোত্তীর্ণ হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তিনি নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, কাব্যকলা বা শব্দবুনন এরকম এক অঁজোপাড়া গাঁয়ে থেকেও করা যায়। আর যা হবে সেরা। অন্যরা অবাক হবে তা দেখে। তাঁর কাব্যের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নতুনত্ব তৈরি করা। প্রেম বঞ্চিতা হয়ে প্রেমের সুক্ষ্মদর্শী চিন্তাভাবনা, স্নেহমমতা, জীবনের আবেগ, নিজস্ব শারীরিক অক্ষমতা, কারাগাররূপী পল্লী যা তাকে বেরোতে দেয়নি ইত্যাদি তাঁর কাব্যের জমিনের আলোচ্য বিষয়। কিছু কিছু প্রত্যয়ের দ্বিচারি ব্যবহার দেখিয়ে পাঠককে মাঝে মাঝে দ্বিধায় ফেলে দেন ইউ। প্রেমের জটিলতা, জীবন-জীবিকার নানা অনুষঙ্গ, ধূমায়িত ভাব, বাস্তবতা, সত্যবাদিতা, পৃথিবী ত্যাগ, নানা বিষয়ে আধ্যাত্মিকা তিনি সুনিপুণভাবে এঁকেছেন তাঁর কাব্যে। নারীদের নানাবিধ সামাজিক জটিলতা তুলে ধরেছেন তিনি।

শারীরিক অক্ষমতাকে মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে জয় করে শব্দশিল্পের এক অনন্য শিল্পিতে উপনিত করেছেন নিজেকে। নিজের জীবন সম্পর্কে ও পৃথিবী সম্পর্কে নিজস্ব দর্শন জানাতে যেয়ে মার্টিন হেইডেগার্স'কে ইউ বলেছেন, 'মানুষ এই ধরায় কবিতাময় জীবন যাপন করে।'

কবিতার বিস্ময়, কবিতার জীবন, কবিতার এক দেবী ইউ এর চমৎকার এবং সাড়াজাগানো সেই দু'টো কবিতাসহ আরো নান্দনিক, অসাধারণ দু'টো কবিতার বাঙলায়ন এখানে উপস্থাপন করছি। উল্লেখ্য যে চীনা ভাষা থেকে ইংরেজিতে ভাষান্তরিক হচ্ছেন মিং ডি। আর সেখান থেকে বাঙলায়ন করেছি লেখক নিজেই।

১. তোমার সাথে ঘুমিয়ে চীনের অর্ধেক ঘুরেছি

তোমার সাথে ঘুমিয়ে অথবা ঘুমন্ত হতে, কী তফাৎ আছে যদি দু'টোর একটি হয়?
দু'টো তনুতে ধাক্কা লাগে- বেগটি, পুষ্পটি ধাক্কায় খুলে গেল
বেগের দ্বারা,
পুষ্পাভরণীয় মেকি বসন্তে-
এরচেয়ে বেশিকিছু নেই
আর আমরা এই ভুল করেছি জীবন পুনারম্ভ করতে।
চীনের অর্ধেকে
এই বিষয়াদি ঘটে যাচ্ছে:
অগ্নিগিরি উদগিরণ হচ্ছে, তটিনী শুকিয়ে যাচ্ছে,
রাজনৈতিক বন্দি আর বাস্তুচ্যুত শ্রমিক পরিত্যক্ত,
এল্ক(এক ধরনের হরিণ) হরিণ আর লালরঙা ঝুটির সারস গুলিবিদ্ধ।
তোমার সাথে ঘুমাবো বলে গুলির শিলাবৃষ্টি অতিক্রম করেছি।
তোমার সাথে ঘুমাবো বলে আমি বহুরাত্রিকে একটি বিহানবেলায় ঠেসে দিয়েছি।
আমি অনেক আমির ভিতর দৌড়িয়েছি আর আমার অনেক একজনের ভিতর দৌড়িয়েছে
তোমার সাথে ঘুমোবার জন্য।
অবশ্যই এখনো আমি ভুলপথে পরিচালিত হতে পারি প্রজাপতির দ্বারা
আর ভুল শংসিত হতে পারে বসন্ত হিশেবে,
হেংদিয়ানের মতো একটি পল্লী নীড়। কিন্তু এইসব,
আর এসবকিছুই অতীব জরুরী কারণ যে,
আমি তোমার সাথে ঘুমাবো।

২.
মাড়াই করার মেঝেতে, আমি মুরগীর পদানুসরণ করি

আর আমি চড়ুইপাখিদের উপরে উড়তে দেখি। তারা চারপাশ দেখে।
আর এটি যদি শুধুমাত্র একটি তণ্ডুলের দানার জন্য অনুপযুক্ত হয়।
তাদের অভ্যন্তরীণ প্রভায় দীপ্ত চোখ আছে।
স্টার্লিংগুলিও(এক ধরনের পাখি) দলবদ্ধভাবে উপরে উড্ডয়ন করছে, কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
তারা ঝাপটানি দিচ্ছে যার শব্দ বিজলী চমকানির মতো মনে হচ্ছে।
যখন তারা চলে গেল তখন আকাশটি গাঢ় নীলে নিচু হয়ে গেল।
মধ্য সমান্তরালের এই গ্রামের গভীরে
আকাশটি সর্বদাই নিচু, তার নীলের দিকে তাকাতে, আমাদের জোরাজুরি করছে,
এই পন্থায় আমাদের পূর্বসূরিগণ নিজেদের ভিতরে দৃষ্টি দিতে শিখিয়েছেন,
সংকীর্ণ ও শূন্য, তাই আমরা পূর্ণ সেপ্টেম্বরের পানে চেয়ে আছি-
আমরা এটির তুচ্ছতায় আরাম বোধ করেছি কিন্তু এটার ক্ষুদ্রতায় আহত হয়েছি।
এভাবেই জীবন যাপন করে আমরা নিরাপদ অনুভব করি।
ঢের বহুব্রীহি। এগুলো কোথা হতে এসেছে?
বছরের পর বছর আমি আশির্বাদপুষ্ট এরপর অমানব হয়েছে।
যখন একই ধরনের বর্ণের সংকেত থেকে আনন্দ এবং বিষাদ আসে,
আমি আনন্দিত
ভোলামন হয়ে। কিন্তু আমি কারথেকে পৃথক হয়েছি?
আমি জ্ঞাত নই। আমি আমার নিজস্ব ঘন্টাগুলির নিকটবর্তী থাকি।

৩.
আমি তোমায় ভালোবাসি

আমি প্রত্যহ পুর্বাভাসের সাথে বাসকরি: জল আনা,
ভাত রান্না করা ও সময়মত ঔষধ সেবন করা
আমি নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি একটি ফলের শুষ্ক কোয়ার ন্যায়
যখন সূর্যরশ্মি উত্তম
সবধরনের চা আমি পান করি: চন্দ্রমল্লিকা, জুঁই,
গোলাপ ও লেবু
যাতে তারা তাদের সৌন্দর্য দিয়ে
আমাকে পথনির্দেশ করে
বসন্ত সময়ের জন্য।

৪.
জনকের প্রতি হাত

আমি তোমার সামনে দাঁড়াবো, নাশকে স্বাগত
আমি তোমার উপর প্রতিশোধ নিব, গ্রামের শিল্পী
কাদা তৈরীর এক মাস্টার
যে আমাকে দিয়েছে একজোড়া চূর্ণ পা
যখন আমাকে মানুষ হিশেবে গঠণ দিচ্ছিলে
এমনকি যদি তোমার শিরা-উপশিরাগুলো কাটো
আমার পদদ্বয় পুন:তৈরী করতে
আমি কখনোই অন্যদের মতো হাঁটতে পারবো না
. . . . . . . . . . . . . . . .
অনুগ্রহ পূর্বক আমার সমাধিতে নতুন শোকাচ্ছাদন দিও না
পরজন্মে, আমি তোমার তনয়া হবো না;
একটি পাহারাদার কুকুর হয়ে জন্মগ্রহণ করাই উত্তম হবে
ইউ পরিবারের জন্য।

তথ্য সন্ধানে:
১. The Hollywood Reporter;
২. উইকিপিডিয়া মুক্তকোষ;
৩. ওয়ার্ল্ড লিটারেচার টুডে;
৪. দ্য এশিয়া ডায়ালগ। 

মীম মিজান
এম. ফিল গবেষক
ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।