নির্মল কুমার প্রধানের দুটি কবিতা
১) কুরুক্ষেত্রের প্রাঙ্গণে
শুনসান রাত্রি বয়ে চলেছে
আদিগন্ত বিস্তৃত ধর্মক্ষেত্র কুরুক্ষেত্র -অন্ধকার!
কুরু-পান্ডবের যুদ্ধ তখনও শুরু হয়নি
পূর্বের দিন মুখোমুখি কৃষ্ণ ও শকুনি একান্তে।
দুই পক্ষের পর্যালোচনা, ভবিষ্যৎ পরিণাম
ঝরে পড়লো দুই মুখ থেকে,
বাসুদেবের প্রতি প্রশ্ন--কেন এই মহাযুদ্ধ, অপরিমিত রক্তক্ষয়?
কিসের হিংসা -প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ, অন্যায় আচরণ?
দোষারোপ একে অপরকে অনিবার্যভাবে।
মামাশ্রী শকুনির কোন কথাই থই পায় না কৃষ্ণের কাছে
অস্ত্রহীন বাসুদেব মানেই কুরু দলের জয়
অবশ্যম্ভাবী চেতনার উল্লাসে আত্মতৃপ্ত কুরু- প্রতিনিধি,
তার জিজ্ঞাসা --অন্যায় পথে, স্বল্প ক্ষমতায়
হীন পান্ডবদের জয় আসবে কি ক'রে?
অবশ্যই জয়ের ধ্বজা উড়াবে প্রবল পরাক্রমী কুরুকুল।
শ্রীমুখের অমৃত বাক্য - ধর্ম সংস্থাপনের এই যুদ্ধে
অন্যায়, অধর্ম, ছল চাতুরী সবই প্রয়োগ হবে
অনিন্দ্য হাসি শকুনিকে বুঝিয়ে দিল আগাম পরিস্থিতি,
কেউ বুঝুক, না বুঝুক সময় কথা বলবে
কুরুক্ষেত্রের বুকে রক্তগঙ্গা বইবে
অহংকারী, অভিমানী, অধিক আত্মবিশ্বাসীর নাশ হবে।
ক্রমে পর্দা নেমে এলো কালো রাত্রির
ভয়ংকর হ'য়ে উঠলো ক্ষেত্রের আকাশ-বাতাস
যেন মহাকাল অপেক্ষা করছে আগামী দিনের জন্য।
২) ইট ও তৃণ
ইট কয় -পাকা আমি, শক্ত-পোক্ত রূপ
পথ-ঘাট, ঘরবাড়ি - গড়ে তুলি খুব।
ঠুনকো সে মাটি নয় ভাঙবো সস্তায়
পুড়ে গিয়ে রূপান্তর সহজ রাস্তায়।
তৃণ বলে -হীন আমি, তুচ্ছ, অতি দীন
এ মাটির কাছে শুধু পেয়েছি যে ঋণ।
কতজন পথ চলে ধূলো গায় মাখি ---
ইট-কাঠ-নুড়ি সব অনায়াসে ঢাকি।
নির্মল কুমার প্রধান
দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ
-
ছড়া ও কবিতা
-
09-06-2024
-
-