অটোয়া, রবিবার ৪ জুন, ২০২৩
আরিফ বখতিয়ার এর কিশোর কবিতা

আমার গাঁয়ের নাম
ছাতিম গাছের কোল ঘেঁষে এক পথ ঢুকেছে বামে
রোজ বিকেলে ঘুড়িরা সব আকাশ থেকে নামে।

ঠিক যেখানে হল্লা করে বকের সারি যায়
কুহুর কুহুর শব্দ তোলে সোনার আঙিনায়।

ঠিক সেখানে মনটা আমার ছুটতে থাকে রোজ
কেউ কি জানো সেই সে গাঁয়ের খোঁজ?

একটা ছোট সাঁকোর পরে মেঠো পথের বাঁক
শব্দ তোলে সন্ধে বেলা বাজন ঢাকির ঢাক।

সবাই বসে গল্প করে ক্লান্তি মুছে ফেলে
বউ-ঝিঁয়েরা হেঁসেল পাড়ে গমের রুটি বেলে।

তাল পাতার ঐ ফাঁক গলে ঠিক চাঁদটা হাসে দূরে
মনটা ঠিকই উদাস হবে বাঁশের বাঁশির সুরে।

জোসনা মাখা এমন রাতের কোথায় পাবো খোঁজ?
ঠিক সেখানে মনটা আমার ছুটতে থাকে রোজ।

একদিকে যায় পূর্ণিমা চাঁদ
একদিকে যাই আমি
সবুজ মাঠের কিনার দিয়ে
রাস্তা থেকে নামি।

ছেলে বেলার স্মৃতিগুলো হাতড়ে ফিরি ঘরে
মনটা আমার উদাস পথিক কেমন কেমন করে।

এত্তোকিছুর বিনিময়ে ভালোবাসার দাম
বুকের মাঝে আগলে রাখি আমার গাঁয়ের নাম।

ঝিনাই নদী
এই তো আমার ঝিনাই নদী তাল-পুকুরের বিল
মাছরাঙা বক শালিক ওড়ে পাখনা মেলে চিল।

দু’ধার জুড়ে বাতাসি বন পিলপিলানো পানি
নাওয়ের পালে বাতাস দোলে হাওয়ার টানাটানি।

রূপালী হাঁস বকের ছানা ছিটায় পানি ঠোঁটে
পাবদা পুঁটি কিলবিলিয়ে তাদের ভয়ে ছোটে।

এই তো আমার ঝিনাই নদী কিশোর বেলার সাথী
ঢেউয়ে দু’কুল উপচে পরে ঢেউয়ের মাতামাতি।

আকাশ নেমে ডুবে গেছে জলের কিনার ঘেঁষে
পূর্ণিমা চাঁদ আঁজলা ভরে জলকে ভালোবেসে। 
কাঁচের মত স্বচ্ছ জলে জোসনা করে খেলা,
দুই পারে তার শতেক মাঝির শতেক রকম ভেলা।

এই যে আমার ঝিনাই নদী
দুই কুলে তাল গাছ
কলমি লতায় লুকিয়ে ঘুমায়
পাঁচ মিশালী মাছ।

বাড়ির পাশে ঝিনাই নদী
তাল-পুকুরের বিল,
তার সাথে প্রাণ মিশে গেছে
মিশে গেছে দিল।

আরিফ বখতিয়ার । ঢাকা, বাংলাদেশ