অটোয়া, শনিবার ২৭ জুলাই, ২০২৪
একটি স্বপ্নের বুনন – কবির চৌধুরী

প্রতিটি মানুষের জীবনে বিশেষ কিছু দিন থাকে। কণ্ঠশিল্পী নাসরীন শশী’র জীবনে এরকম একটি দিন ১৬ জুলাই, ২০২৩। এদিন শশী আটটি মৌলিক গান দিয়ে তাঁর প্রথম সিডি “স্বপ্নের অন্তরে” অটোয়ার ‘কৈলাস মিতাল’ থিয়েটারে আয়োজিত তাঁর ‘একক’ সঙ্গীতানুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের হাতে তুলে দেন। সিডিটি বিতরণের প্রাক্কালে তিনি বলেন, “আজকের দিনটি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের। আজ আমি আমার গাওয়া আটটি মৌলিক গান নিয়ে তৈরি প্রথম সিডি ‘স্বপ্নের অন্তরে’ আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রোতামণ্ডলীদের হাতে তুলে দিচ্ছি…” নাসরীন শশী’র মত ‘দিনটি’ আমার কাছেও বিশেষভাবে স্মরণীয়। কারণ, এদিন আমি ‘কৈলাস মিতাল’ থিয়েটারে আমার অবচেতন মনের কিছু বিক্ষিপ্ত ‘চিন্তা আর স্বপ্ন’ বাস্তবায়ন করার সাক্ষী হয়েছি।

মানুষমাত্র কল্পনাপ্রবন আর স্বপ্নবিলাসী। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। স্বপ্ন দেখতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। স্বপ্ন দেখে বসে থাকলে তো ভাল ছিল। কিন্তু আমার বেলায় তা হয়না, আমি স্বপ্ন দেখে বসে থাকতে পারিনা, সেই স্বপ্ন পূরণ করতে উঠেপড়ে লেগে পড়ি—সেটি সম্পন্ন করার যোগ্যতা আছে কি না তা একবারও ভাবি না। ২০০৯ সালে “আশ্রম” প্রকাশ করার পর থেকে প্রায়ই আমার মনে একটি প্রশ্ন খেলা করতো! সুযোগ পেলেই ভাবতাম—অটোয়ায় স্থানীয় শিল্পীদের জন্যে একটি আত্মমর্যাদাশীল গানের মঞ্চ তৈরি করলে কেমন হয়? মঞ্চটি এমন হবে যেখানে শিল্পীরা চিরচেনা হিংসা-বিদ্বেষ বাদ দিয়ে মন ভরে গান করবেন এবং দর্শকরা তা শুনবেন এবং উপভোগ করবেন। এই স্বপ্ন বহুদিনের। কানাডায় আসার পর থেকেই এরকম অনেক অকল্পনীয় আর অবাস্তব চিন্তা করেছি, বিশেষ করে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখার পরে। গান শুনতে ভাল লাগে বলে রেস্টুরেন্ট, হল, অফিস, বাসার বেসমেন্ট, যেখানেই গানের অনুষ্ঠানের খবর পেতাম, সেখানেই চলে যেতাম। বিশেষ কোন কারণ ছাড়া অটোয়ায় আয়োজিত ছোট-বড় কোন গানের অনুষ্ঠান বাদ দেওয়া হতনা। এরকম একটি অনুষ্ঠান আমার কিছু বিক্ষিপ্ত চিন্তার লালিত-পালিত স্বপ্নের ঠিকানা “আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান” ধারনাটি জনসম্মুখে নিয়ে আসতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অনুষ্ঠানটি ছিল অটোয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের।

কয়েকবছর আগে ভ্যানিয়ার রেসলিউ কমিউনিটি সেন্টারে দূতাবাস আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এই দুই পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক নামী-দামী  সুবক্তাদের অংশগ্রহণে মূল্যবান আলোচনানুষ্ঠানের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হলটি শ’খানেক অতিথির উপস্থিতিতে আলোচনানুষ্ঠানের জন্য সুন্দর স্থান কিন্তু শহরের ২৫/৩০ জন শিল্পীর অংগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পর্যাপ্ত নয়। হলভর্তি অতিথি, শিল্পী  এবং বাদ্যযন্ত্র আর মাইকের আওয়াজে মাথাব্যাথা চলে আসার কারণে অনুষ্ঠান শেষ না করেই বাসায় চলে আসার জন্যে হল থেকে বের হই। হল থেকে বের হতে হতে চিন্তা করছিলাম তিন/চার ঘন্টার অনুষ্ঠানে মাত্র আধাঘন্টা সঙ্গীত পরিবেশনের জন্যে শহরের একঝাঁক শিল্পীরা কি না কষ্ট করছেন! 

অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের অধিকাংশই কানাডায় নতুন। কতদিন হয় এদেশে? চার/পাঁচ বছর? একটা/দুইটা গান গাওয়া, একটা/দুইটা আবৃত্তি করা, সর্বোপরি অনুষ্ঠানের অংশ হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চিন্তা করছিলাম এই নতুন অভিবাসন নেওয়া একঝাঁক সংস্কৃতিবান তরুণ লোকগুলোকে দিয়ে আমাদের এই নতুন আবাসভূমিটা ভালই চাষ করা যেত। কিন্তু কে করবে? যারা করার কথা ছিল তারা তো অন্য এক জগতে হারিয়ে যাচ্ছেন! 

কানাডা-আমেরিকার বড় বড় সংগঠকরা, বাংলা সংস্কৃতি প্রসারের জন্যে হাজার হাজার ডলার খরচ করে বাংলাদেশ বা ইন্ডিয়া থেকে শিল্পী এনে বড় বড় অনুষ্ঠান করেন অথচ স্থানীয় শিল্পীরা ভাল পরিবেশে গান গাওয়ার সুযোগই পায়না। উদাহরণস্বরূপ উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় সংগঠন ‘ফোবানা’র কথা বলা যায়। “ফোবানা” সংগঠকরা প্রতি বছর লাখ লাখ ডলার খরচ করে অভিবাসী বাঙালিদেরকে আনন্দ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে ডজন ডজন শিল্পী এনে অনুষ্ঠান করেন। একটি উইকেন্ডে বাংলাদেশের শিল্পীদের সাথে কয়েকঘন্টা সময় কাটাবার জন্য হাজার হাজার ডলার খরচ না করে যদি এই হাজার হাজার ডলার থেকে সামান্য কিছু ডলার স্থানীয় শিল্পীদের পেছনে খরচ করা হত তাহলে আমরা আমাদের মধ্যেই অনেক শিল্পীর জন্ম দিতে পারতাম। তাই বলে আমি বাংলাদেশ থেকে শিল্পী আনার বিরোধিতা করছি না। আমি সংস্কৃতি আদান-প্রদানে বিশ্বাস করি, কিন্তু তার আগে মনে করি আমি কী আদান-প্রদান করছি? এই আদান-প্রদানে আমাদের কী লাভ হচ্ছে? এ নিয়ে প্রায়ই অনেকের সাথে আমার আলাপ হয়, অনেকের কাছে জানতে চাই তার আসল কারণ, কিন্তু কেহই সঠিক উত্তর দিতে পারেননা। বিভিন্ন সময় অটোয়ার বড় কয়েকজন সংগঠকসহ ‘ফোবানা’র একাংশের এক সংগঠককে জিজ্ঞেস করেছি, আপনারা কানাডা এবং আমেরিকার শিল্পীদের দিয়ে প্রোগ্রাম করেন না কেন? উত্তরে শুধু হাসলেন! এবং বললেন- করি তো! 

হ্যাঁ! করেন ঠিকই, তবে স্টেজ গরম করার জন্য। 

এসব চিন্তা করতে করতেই হলের বাইরে আসি। এসেই দেখতে পাই—শহরের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আশেক বিশ্বাস এবং ‘আশ্রম’র সহ-সম্পাদক মান্নান মিঠু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। হ্যালো বলে আশেক বিশ্বাসকে জিজ্ঞেস করলাম, “আশেক ভাই, আপনার গান কখন?” উনি বললেন, “এই অবস্থায় কি গান করা যায়? আমি করবো না, মান্নান সাহবের সাথে সিগারেটটা শেষ করেই চলে যাব“।  আমি বললাম, আমিও চলে যাচ্ছি, জানি না কি জন্য যে এসব অনুষ্ঠানে আসি —আর যাওয়ার সময় মাথাব্যাথা নিয়ে যাই। মিঠু ভাই বললেন—সিগারেট খেয়ে যান ভাই। সেই সিগারেট খেতে খেতে শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর গান-বাজনা নিয়ে আলোচনার মাঝেই অটোয়াতে এক নতুন যাত্রার সূচনা হয়—বহুদিনের জমানো ক্ষোভ আর সযত্নে লালিত একটি স্বপ্নের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটে— আমি হটাৎ করে আশেক ভাইকে জিজ্ঞেস করি- আমি যদি আপনার জন্য ‘আশ্রম একক সঙ্গীতসন্ধ্যা’র আয়োজন করি আপনি কি গান করবেন? উনি কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন, তারপর বললেন, “আমি কালকের মধ্যেই আপনাকে জানাচ্ছি”। আশেক বিশ্বাস তাঁর কথামতো পরের দিন ফোন করেন এবং বলেন- “আমি গান করবো, তবে তার আগে কোথাও বসে আপনার সাথে কিছু বিষয় নিয়ে আলাপ করতে হবে।” আমি বললাম, তাহলে এই উইকএণ্ডে মিঠু ভাইয়ের (সহ-সম্পাদক, আশ্রম) বাসায় চলে আসেন, মিঠু ভাইকে সাথে নিয়েই আলোচনা করবো।  

২০১৪ সালে অটোয়া শহরে নতুন অকল্পনীয় এক যাত্রার সঙ্গী হওয়ার জন্য জানুয়ারির এক বিকেলে প্রচন্ড তুষারপাত আর ঠাণ্ডার মাঝে আশেক বিশ্বাস তাঁর কথামতো মিঠু ভাইয়ের বাসায় এসেছিলেন। বরাবরের মতো এই যাত্রায়ও মিঠু ভাই এবং তার স্ত্রী সুলতানা শিরীন সাজি (বর্তমান সম্পাদক, আশ্রম) আমার সাথী। অনেক আলোচনা-পর্যালোচনার পর এপ্রিল মাসেই আশেক বিশ্বাসকে দিয়ে কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৈলাস মিতাল থিয়েটারে “আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান” আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

সেই অকল্পনীয় আর অবাস্তব একটি ‘চিন্তা আর স্বপ্ন’ এখন অটোয়া শহরের বাস্তব এবং জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। তবে বলতে দ্বিধা নেই আশ্রম সঙ্গীতানুষ্ঠানের শুরুতে আমাদের মাঝে “স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে” একক আয়োজনে কিছুটা সংশয় ছিল। আমরা যখন আমাদের ঘরের ড্রয়িং রুম থেকে শুরু করে বাড়ির বেসমেন্ট বা রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে বিনা পয়সায় তাদের গান শুনতে পারি—সেখানে টিকেট করে কে যাবে এসব শিল্পীদের গান শুনতে? এছাড়া একনাগারে ওরা কি ২৫/৩০টা গান করতে পারবে? আমাদের সব সংশয় দূর করে দিয়েছিলেন কণ্ঠশিল্পী আশেক বিশ্বাস—অটোয়ার সঙ্গীতপ্রিয় দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়ে আশেক বিশ্বাস সেদিন ৩০টার বেশি গান পরিবেশন করেছিলেন—ধন্যবাদ আশেক বিশ্বাস। 

আশেক বিশ্বাসের অনুষ্ঠানের পর আশ্রম মঞ্চে গত কয়েক বছরে অটোয়ার অনেক কণ্ঠশিল্পীদের, যেমন, অপূর্ব দাস, অর্পিতা দাস, নাসরীন শশী, রিজওয়ানা আলমগীর আরিফ, জয়ন্ত ভৌমিক, ডালিয়া ইয়াসমিন, নন্দিতা ঘোষ , মোহাম্মদ রহমান লিটন, মণিকা মোনা (মন্ট্রিয়েল) এবং হাদিউল হক হিরো (টরন্টো)-কে নিয়ে অটোয়ার বাংলা সাহিত্য পত্রিকা “আশ্রম” এর ব্যানারে আটটি  “আশ্রম সঙ্গীতানুষ্ঠান” এর আয়োজন করেছি। এর মধ্যে পাঁচটি ছিল একক সঙ্গীতানুষ্ঠান। যে গুলো করেছেন যথাক্রমে, আশেক বিশ্বাস (একটি), নাসরীন শশী (দুইটি), রিজওয়ানা আলমগীর আরিফ (একটি), এবং ডালিয়া ইয়াসমিন (একটি)। বাকী তিনটি অনুষ্ঠান করেছেন যথাক্রমে, অপূর্ব দাস ও অর্পিতা দাস (একটি), নাসরীন শশী ও জয়ন্ত ভৌমিক (একটি), এবং মণিকা মোনা, নন্দিতা ঘোষ, মোহাম্মদ রহমান লিটন এবং হাদিউল হক হিরো (একটি)। 

আশ্রম “একক” সঙ্গীতানুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল অটোয়ার স্থানীয় শিল্পীদেরকে উৎসাহিত করা, তাঁদের শিল্পীসত্তার বিকাশে পূর্ণ সহযোগিতা করা। কারণ, সঙ্গীতের প্রতি নিবেদিত এসব শিল্পীরা দেশে থাকলে নিশ্চয়ই নামকরা কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ওরা আজ দেশান্তরি এবং প্রকৃত সঙ্গীতচর্চার সুযোগ পাচ্ছেননা। ‘আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান’র আয়োজক হিসেবে অংশগ্রহণকারী অনেক শিল্পীকে কাছ থেকে দেখেছি। সঙ্গীতের প্রতি তাঁদের একাগ্রতা দেখে মনে হয়েছে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পেলে ওদের অনেকেই গানের জগতে প্রচুর খ্যাতি অর্জন করতেন। 

চর্চার সাথে একাগ্রতা দিয়ে একজন শিল্পী যে নিজের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারেন তার উজ্জ্বল উদাহরণ কণ্ঠশিল্পী নাসরীন শশী। সৌখিন এক শিল্পী ছিলেন শশী। অটোয়ার অনুষ্ঠানগুলোতে মাঝেমধ্যে গান করতেন। ছোটবেলায় গানে হাতেখড়ি। কানাডায় আসার পরেও তপন নন্দির কাছে গান শিখেছেন। কিন্তু পড়াশোনা আর পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ইচ্ছা থাকাস্বত্ত্বেও কানাডায় সেরকম গান করা হয়নি। অথচ আশ্রমের প্রোগাম করতে গিয়ে তিনি নিয়মিত গানের চর্চার প্রতি উৎসাহিত হয়েছেন। সঙ্গীতকে জীবনের অংশ হিসেবে নিয়েছেন। সঙ্গীতের প্রতি ভালবাসা আর প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির কারণেই নাসরীন শশী “স্বপ্নের অন্তরে” সিডিটি বের করতে পেরেছেন, যেখানে সবকয়টি গানই অটোয়ায় বসবাসকারী তিনজন গীতিকার যথাক্রমে লেখক মহসীন বখত, শাহীনুর ইসলাম এবং শাহ বাহাউদ্দীন শিশির লিখেছেন। সঙ্গীতের প্রতি শশীর আগ্রহ আর একাগ্রতা এত প্রবল যে ২০১৫ সালে আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে গান পরিবেশনের পরপরই কয়েকটি মৌলিক গানে কণ্ঠ দেন যার মধ্যে গীতিকার মহসীন বখতের “একটি জানালার গল্প বলি শোন” এবং গীতিকার শাহীনুর ইসলামের “এত ভালবাসী বন্ধু” উল্লেখযোগ্য। এখানেই “আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান” নামক স্থানীয় শিল্পীদের জন্যে তৈরি সঙ্গীতানুষ্ঠানের সার্থকতা! এই অনুষ্ঠানের কারণেই আমরা শহরে তিনজন গীতিকারের সন্ধান পেলাম। স্থানীয় শিল্পীর মৌলিক গানের একটি সিডি পেলাম।  নাসরীন শশীর মৌলিক গানের সিডি এবং একক সঙ্গীতানুষ্ঠান আমাকে আর বড় স্বপ্ন দেখার লোভ দেখাচ্ছে। জানিনা আগামীতে কি স্বপ্ন দেখবো। নতুন স্বপ্ন দেখার আগে আমি ‘আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান’কে জনপ্রিয় এবং মর্যাদাশীল অনুষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিভিন্ন সময়ে ‘আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠান’এ অংশগ্রহণকারী সকল শিল্পী ও কলাকুশলীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আমার কিছু বিক্ষিপ্ত ‘চিন্তা আর স্বপ্ন’কে বাস্তবায়িত করার জন্য কণ্ঠশিল্পী নাসরীন শশীকে ধন্যবাদ। 

পরিশেষে, আশ্রম একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে আমি প্রয়াত মান্নান মিঠু (সহসম্পাদক, আশ্রম) এবং আমার বড় ভাই খালেদ চৌধুরী ও ভাবী সালমা, ছোট ভাই আফু, শাহীন ও তার স্ত্রী শিফা, বন্ধুবর, মহসীন বখত, ঝলক মজুমদার, নূরুল আমীন চৌধুরী খছরু, জাহিদা বেগম মিতা, গুলজাহান রুমি, সুলতানা শিরীন সাজি, আছিয়া বেগম, ফেরদৌস চৌধুরী পলাশ, গোলাম রব্বানী মিঠু, জামাল চৌধুরী, সুপ্তা বড়ুয়া, শাহীনুর ইসলাম, সৌরভ বড়ুয়া, শাহ বাহাউদ্দীন শিশির, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনসহ অটোয়ার স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ এবং সঙ্গীতপ্রিয় দর্শকশ্রোতা, সবাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ, আমার পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি আপনাদের বুদ্ধি-পরামর্শ এবং সার্বিক সহযোগিতা না পেলে হয়ত ২/৪ হাজার বাঙালি অধ্যুষিত শহর অটোয়াতে স্থানীয় শিল্পী দিয়ে “একক সঙ্গীতানুষ্ঠান” আয়োজন করা সম্ভব হত না— উদ্যোগটা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু আপনাদের সহযোগিতার ফলে তা হয়নি, আমাদের এই “স্থানীয় শিল্পীর একক সঙ্গীতানুষ্ঠান” ধারনাটি এখন উত্তর আমেরিকায় স্থানীয় শিল্পীদেরকে উৎসাহিত করার খুবই জনপ্রিয় একটি মডেল। অনেক শহরেই এখন স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে একক বা দ্বৈত সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে এবং দর্শকশ্রোতারা তা আগ্রহ সহকারে উপভোগ করছেন।

সঙ্গীতের জয় হোক। আশ্রমের জয় হোক।

কবির চৌধুরী
প্রকাশক, আশ্রমবিডিডটকম
অটোয়া, কানাডা