অটোয়া, রবিবার ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
উদ্বর্তিনী - শাশ্বত বোস

কালো রঙের কিছু একটা আজ আকাশে উড়ছে
দিগ্বিদিক শূণ্য করে ঘন কালো মেঘের মতো,
কালো পাখির পালকের মতো,কালো সুতোর মতো মূর্তিমান অশনি। 
কিন্তু ওগুলো তো ঘুড়ি নয়, ওড়না নয়, ফানুস নয় এমনকি কালো পতাকাও নয়।
নিস্পলক মোমের দৃষ্টিতে তাকালে বোঝা যায় ওগুলো কোনো মেয়ের মাথার চুল। 
লাঠির মাথায় বেঁধে, কেউ শূণ্যে তুলে ছেড়ে দিয়েছে। 
নিয়ম সৃষ্টির বিপরীতে গিয়ে হাওয়ার বেড়াজাল টপকে পতপত করে উড়ছে। 
কিন্তু কে ওড়ালো ওদের, এত সাহস কে দিল?
এই সাহসটাই তো সম্বল, সাহস ভরা বুকেই তো গুলি খেয়ে ঝাঁঝরা হওয়া যায়। 
নির্বিচারে পুলিশ সেই বুকেই তো পা তুলে দেয়। 
সেই বুক, যে দিকে আদিম যুগ থেকে ছুটে আসে উন্মত্ত লোলুপ পুরুষের দল, তাদের হিংস্র থাবা নিয়ে। 
কিন্তু চুলগুলো আজ খুব বেপরোয়া ভাবে উড়ছে, যেন ক্ষীণতনু বলিরেখা এঁকে যাচ্ছে শ্রান্ত আকাশের মুখে। 
এ কেশ কোনো রূপকথার সিন্ড্রেলার নয়, কিংবা নয় কোনো পৌরাণিক কালের যাজ্ঞসেনীর। 
এই কেশকুন্তলে খোদিত নেই কোনো শ্রাবস্তীর কারুকার্য্য। 
বরং এ কেশ স্পর্ধার কথা বলে, এক দুঃসহ স্পর্ধা। 
যে স্পর্ধায় বেলা বোস তার মৌনমুখরতার জাল বিদীর্ণ করে
হয়ে ওঠে আজকের বেলা চাও, স্বৈরাচারীকে বেশ খানিকটা অবজ্ঞা ছুড়ে দিয়ে। 
নিজের সুললিত বেণী কেটে প্রেমিককে উপহার দিয়ে প্রতি কামনায় চায়, স্বাধীনতা নয় বরং বহু ইপ্সিত নারীত্বের অধিকার। 

শাশ্বত বোস
শ্রীরামপুর, হুগলী