অটোয়া, শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
ফরিদ তালুকদারের দুটি কবিতা

১) ইউটোপিয়া সংস্করণ!

ল--- 
পরানে পুষে রাখা খসড়াটা এবার সেরে ফেলি মন মদিরার সুরা পানে!
কৃষ্ণচূঁড়ার রক্তিম অনুদানে, ভাব দিগন্তে লিখে দেই আনাগত স্বপ্নের শপথ!

এই খাল, এই নদী, বিস্তীর্ণ প্রান্তরের কিনার ছুঁয়ে বিছুটি লতার দল, কলমির জল ঘরে জোড়া পানকৌড়ির প্রেম সরোবর...
সবাই একে একে আসুক,  আকাশে ছড়িয়ে দিক তুরীয়ানন্দের বার্তা, স্বাগতম দুয়ারে দুয়ারে!

হাতে হাত, বুকের গহীনে বুক রেখে দেখ, এক সূর্য উষ্ণতায় কী তেজ এই অনুভবে!

মরমে মরিয়া নয়, খুলে যাক সিন্ধু বুকের বন্ধ দুয়ার!

আজ থেকে চাইলেই আমরা ব্রম্মপুত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো তার জন্ম উৎসে
নুতন করে শুরু করবো বুড়ো পৃথিবীর সভ্যতার আবাদ!

চাইলেই আমরা ভালোবাসার শতকোটি শ্বেত পদ্মকে পাহারায় বসিয়ে দিবো পৃথিবীর সব জলজ প্রান্তরে,
শুভেচ্ছার বার্তা নিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অপেক্ষায় থাকবে লাল গোলাপ, মল্লিকা আর কামিনীর ঝাড় 
ভোরের কুয়াশার মতো উধাও করে দিবো শতবর্ষ ধরে  জনমনে প্রোথিত জুজুর সব ভয়!

চাইলেই আমরা একদিনে বিলুপ্ত ঘোষণা করে দিবো ন্যাটোর সব কর্মকাণ্ড, তার স্থাপনা, মারণাস্ত্রের সব আয়োজন, সব ষড়যন্ত্র! 

আমরা চাইলেই একটার পরে একটা করে বিলুপ্ত ঘোষণা করবো পৃথিবীর সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, সিনেগগের তত্ত্বাবধানে চাষ হওয়া বিভেদ, বিভাজন আর কুসংস্কারের যাবতীয় ফতোয়া!

আমরা চাইলেই...

মানুষ তো ডুবতে ডুবতেই জেগে উঠে আবার
উঠে দাঁড়ায় তার পোড় খাওয়া মজবুত শির-দাঁড়ায় 
জীবনকে কাছে ডেকে নেয় ভালোবাসা আর মায়ার অপার মহিমায়!

চল!---

২) জল বেদনার ঘর

তোটাই রং বদলাক আকাশ, তাতে কে-ই বা জেগে উঠে মৃত নদীর চরায়?

কবিরা দুঃখ পোষে, খুব যত্নে দুঃখ পোষে
ভালোবাসার এক পেয়ালা হেমলকে চুমুক দিয়ে-
জনম জনম বাঁচে!

অহর্নিশি এ পরানের দুয়ার খুলে রাখে যে মানুষ, নাই বা সে এলো, সমাজ না হয় দিলোই তাকে পরনারী খেতাব
কতোটুকু তাতে যায় আসে, কতোটুকুই বা চেয়েছি ঐ দেহের বৈভব? 

রাত শেষে বৃক্ষও ভুলে যায়, যে আঁধার তার প্রিয় ছায়াকে করেছিলো গ্রাস
কবিরা ভুলে না, মরমে মরিয়া মরে, আলো জ্বেলে রাখে
নিযুত নিযুত বছর, মাস!

জলের ঘরে জল লিখতে এখনো তুমি শিখনি কবি
সে যে সেই-ই এক রমণীয় পরিহাস
যাকে তুমি অর্ঘ্য দিলে, যাকে তুমি সাজিয়ে রাখলে, হৃদয়ে নিরন্তর---

বারোমাস!

ফরিদ তালুকদার
টরন্টো, কানাডা